সম্প্রতি পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার ডিপোজিটের মাইলফলক পেরিয়ে এসেছে বাজাজ ফিনান্স। প্রায় এক মিলিয়ন ডিপোজিটর এই যাত্রার সঙ্গী। তাঁরা সংস্থার বিভিন্ন আমানত প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্রেডিট রেটিং (AAA/Stable, লং টার্ম ডেট প্রকল্পের ক্ষেত্রে) এবং পরিষেবা দেওয়ার সুনামের উপর ভরসা রাখেন বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ। ‘সঞ্চয়’কে বিশেষ কয়েকটি কথা জানালেন শচীন সিক্কা, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট-ফিক্সড ডিপোজিটস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস। তাঁর সঙ্গে প্রশ্নোত্তরে নীলাঞ্জন দে
আজকের আমানতকারীর প্রয়োজনের কথা ভেবে এই প্রশ্ন করছি। কী ধরনের সুযোগ আছে তাঁর সামনে?
ফিক্সড ডিপোজিটের বাজারের পরিস্থিতি দেখুন। ডিপোজিট রেট তো বেশ বেড়ে গিয়েছে। কোভিডের আগে যা রেট ছিল, তা থেকে ১.৫-২% বেশি এই মুহূর্তে। তাই যাঁরা মিডিয়াম বা লং টার্মের জন্য স্থায়ী আমানত পছন্দ করেন, তাঁরা এই সুযোগ নিতে অবশ্যই পারেন। আমাদের প্রকল্পের কথাই ধরুন, বিশেষ কয়েকটি রেটের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই এই প্রসঙ্গে। আর ক্রেডিট রেটিংও এই ক্ষেত্রে আকর্ষণীয়। ক্রিসিল এবং ইক্রা, এই দুই এজেন্সি আমাদের AAA রেটিং দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে আমাদের চুয়াল্লিশ মাসের প্রকল্পের কথা বলতে চাই। অনেকের কাছে এর শর্তাবলী পছন্দসই হতে পারে। মনে রাখতে হবে যে এই যুগের গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যমে বুকিং করতে চান, কয়েক মিনিটের মধ্যে তা করা সম্ভব।
[আরও পড়ুন: বিনিয়োগের বাজারে মিলবে সাফল্য, তবে নজরে রাখতে হবে এই বিষয়গুলি]
আচ্ছা, ইনফ্লেশন তো খুবই চড়া। সাম্প্রতিক তথ্য তাই বলছে। এই বিষয়ে তো আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই পরিস্থিতি যদি আগামি দিনেও চলে, তাহলে রেট তো বদলাবেই। তখন ডিপোজিটাররা কী প্রত্যাশা করতে পারেন?
হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। ফিনান্সিয়ালাইজেশন উপেক্ষা করার মতো নয়। বরং তা হচ্ছে বলেই অনেক পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। দেখুন, আমানত প্রকল্পে তো ‘স্টেবিলিটি’ পূর্ণমাত্রায় থাকে। এখানে কোনও অনিশ্চয়তা নেই, মার্কেট নির্ভরতার প্রশ্ন ওঠে না। রিটার্ন কেমন হাতে আসবে তা তো আগে থেকেই জানা থাকে, তাই না? অতএব অন্য নানা ধরনের লগ্নির তুলনায় এখানে ভরসা রাখেন সাধারণ মানুষ। রিটার্ন থাকে ফিক্সড এবং লগ্নির মেয়াদও ফিক্সড। তার মানে, আমানতকারী নিজের আর্থিক লক্ষ্যগুলির একাংশের জন্য ডিপোজিট প্রকল্পের মাধ্যমে পূরণ করতে পারেন। আমাদের ডিপোজিট প্রকল্পগুলি সেই জন্যই জনপ্রিয়তা লাভ করছে। দীর্ঘমেয়াদের জন্য ভাল সুদের হার পাওয়া যাবে–এই ধারণার কোনও বিকল্প হয় না এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর কাছে। তারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পারছি আমানতের সংখ্যায় এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যানে।
এই দেশে তো ফিনান্সিয়ালাইজেশনের ট্রেন্ডে বেশ জোয়ার। ছোট শহরে বা তুলনায় প্রান্তিক ক্ষেত্রে কী পরিস্থিতি দেখছেন?
আমাদের নিজের ‘ইকোসিস্টেম’ নিয়ে একটু বলি। বাজাজ ফিনান্সের পরিকাঠামো বেশ বিস্তৃত এই মুহূর্তে। প্রায় ৩,৮০০ লোকেশনে আমরা উপস্থিত। এগুলির মধে্য আনুমানিক ১,৫০০ হল রুরাল বা গ্রামীণ। এই যে প্রান্তিক মার্কেটের কথা বললেন, এই সব ক্ষেত্রে বেশ গতি এসেছে, দেখা যাচ্ছে। মনে রাখতে হবে, কৃষিকাজের নিজস্ব অর্থনীতির বিষয়টি। সেভিংসের সাম্প্রতিক তথ্য দেখুন, গ্রামীণ বাজারে কী হচ্ছে তা উপলব্ধি করতে হবে। এছাড়াও বলে রাখি, দেশজুড়ে আমাদের প্রায় ৩৩,০০০ পার্টনার আছেন। ছোট শহরে এঁরাই আমাদের ‘লাস্ট মাইল কানেকটিভিটি’। নিশ্চিত হবেন, এঁদের জন্যই আমরা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছতে পেরেছি।
(লেখক লগ্নি পরামর্শদাতা)