শুভঙ্কর বসু: শীতলকুচি কাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC)। সোমবার প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণনের বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করে। তবে এদিন শুনানি হয়নি। শনিবার, কোচবিহারে ভোট চলাকালীন শীতলকুচি (Sitalkuchi) বিধানসভা কেন্দ্রের জোড়পাটকিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিচালনায় ৪ জনের মৃ্ত্যুতে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। এবার সেই মর্মান্তিক ঘটনা গড়াল আদালতের দুয়ারে। কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে সেদিন গুলি চলেছিল, তা বিস্তারিত জানতে চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন ফিরদৌস শামিম। তাঁর দাবি মূলত তিনটি – ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা, আগামী দিনে অভিযুক্তদের ভোট প্রক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে দেওয়া ও ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য দান। এই মামলার শুনানি কবে, তা এখনও জানায়নি হাই কোর্ট।
শনিবার শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। প্রাথমিকভাবে সুরক্ষায় একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার পর এবার ঘটনাস্থলের একাধিক নমুনা খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করেছেন কমিশনের কর্তারা। আর তাতেই বেশ কিছু ‘মিসিং লিংক’ উঠে আসছে। প্রত্যন্ত এলাকার শীতলকুচির জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের সমস্ত ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ওয়েব কাস্টিং (Web casting) হয়নি। দেখা গিয়েছে, ঘটনার সময় তা ছিল ‘অফলাইন’। ভাঙা হয়েছিল সিসিটিভি। তবে রেকর্ড করা হয়েছে সমস্ত ঘটনা। সিসিটিভি ভাঙার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত কী ঘটেছিল, সেই রেকর্ডিং থেকে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাতে যেসব তথ্য উঠে আসছে, তাও কম চাঞ্চল্যকর নয়।
[আরও পড়ুন: চোখ রাঙাচ্ছে করোনা, পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া সিদ্ধান্তের পথে নবান্ন]
দিল্লির তরফে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে শীতলকুচি নিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তাতে উল্লেখ ছিল, শুধু CAPF’এর উপর হামলা চালানো নয়, ওইদিন সরকারি সম্পত্তি ইভিএম ছিনতাইয়ের চেষ্টাও চলেছিল। এছাড়া বুথের ভিতরে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। তাহলে কি বুথের ভিতরেও তাণ্ডব চালানো হয়? এই প্রশ্নও উঠছে। ফুটেজ থেকে এসবের উত্তর না মিললে কমিশনের সর্বশেষ হাতিয়ার হতে চলেছে প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়রি। নিয়ম অনুযায়ী, তাতেই ভোটের দিনের যাবতীয় ঘটনাবলি থাকার কথা। তাই সেই ডায়রি থেকে ওইদিন ১২৬ নং বুথে ঠিক কী কী ঘটনা ঘটেছিল, তা জানতে পারবে কমিশন।