সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “বাবা তুমি উঠছ না কেন? আমি কিচ্ছু চাই না, তুমি শুধু ফিরে এসো বাবা।” হাউহাউ করে কাঁদছে দশ বছরের মেয়েটা। চোখ বেয়ে নামছে অঝোর ধারা। কফিনে শায়িত কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) রাজৌরি সেক্টরে বিস্ফোরণে নিহত জওয়ান নীলম সিং চিবের দেহ। বাবা যে আর ফিরবে না, তা কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না শিশুকন্যা পবন চিবের। বারবার সে বাবার চোখমুখে হাত বোলাচ্ছে আর ডুকরে উঠছে। পাশে দাঁড়িয়ে তার মা, নীলমের স্ত্রী। কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত তিনি। থতমত চোখমুখ। বিশ্বাস করতে পারছেন না এই ভাগ্যের বিপর্যয়। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছেন বন্দনা মৃত স্বামীর মুখের দিকে। মায়ের পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে সাত বছরের ছেলে অঙ্কিত। উপস্থিত সেনাকর্মী, পরিবারের সদস্য, পাড়া প্রতিবেশীরা অসহায় দৃশ্যের সাক্ষী।
শুক্রবার কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে জঙ্গি হানায় শহিদ হয়েছেন পাঁচ সেনা জওয়ান। তাঁদের মধ্যে ৯ প্যারা এসএফের চারজন কমান্ডো ও রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ১ জন সেনা। মৃত্যু হয়েছে কমান্ডোর প্যারাট্রুপার নীলম সিং চিবেরও। তিনি কাশ্মীরের আখনুর জেলার বাসিন্দা। শনিবার দলপত-চক ক্রিপালীপুর গ্রামে জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনবন্দি নীলমের দেহ পৌঁছায়। দেশের বীর সন্তানকে শেষ দেখা দেখতে হাজির হন শয়ে শয়ে মানুষ। সেখানেই বেদনাময় এক দৃশ্যের সাক্ষী হল জনতা। নীলমের স্ত্রী, কন্যা এবং পুত্র কান্নায় ভেঙে পড়লেন।
[আরও পড়ুন: অন্ধকারেও কথার ‘আলো’, বিদ্যুৎহীন অবস্থাতেও নিজের ভাষণ চালিয়ে গেলেন রাষ্ট্রপতি!]
গ্রামে শহিদের দেহ আসার আগে জম্মুতে নীলমকে শ্রদ্ধা জানান জম্মু এবং কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং একাধিক সেনাকর্তা। ধ্বনি ওঠে ‘নীলম সিং অমর রহে’। এরপরই দেহ আনা হয় জওয়ানের গ্রামের বাড়িতে। পরে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। নীলমের বাবা হরদেব সিং চিব বলেন, “ছেলের জন্য গর্বিত আমি। নীলম একজন সাহসী কমান্ডো ছিল। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াই করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। জন্ম থেকেই ছিল যোদ্ধা। ছোটবেলাতেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল।”