সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে আছড়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। রূপ পালটে এবার আরও ভয়ানক হয়েছে আণুবীক্ষণিক জীবটি। এহেন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিন ভাষণের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তুফানের মতো করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আপনারা যে পীড়া সহ্য করছেন, তা আমি জানি। যাঁরা আপনজনদের হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। এই চ্যালেঞ্জ খুব বড়। কিন্তু আমাদের সবাইকে মিলে এই বিপদের মোকাবিলা করতে হবে। আমি দেশের সমস্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সফাইকর্মী, সেনাবাহিনীর জওয়ান ও পুলিশকর্মীদের সম্মান জানাচ্ছি। আপনারা নিজের পরিবার ও সুখের চিন্তা ছেড়ে অন্যদের জীবন বাঁচাতে দিনরাত কষ্ট করেছেন।” করোনা আবহে দেশের হাসপাতালে অক্সিজেনের হাহাকার নিয়ে এদিন দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, অক্সিজেনের জোগান বাড়িয়ে তুলতে সমস্ত চেষ্টা করা হচ্ছে। ওষুধের উৎপাদন বাড়াতে সমস্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে। টিকা নিয়ে এদিন নমো বলেন, “আমাদের কাছে টিকা রয়েছে। এই চেষ্টায় বেসরকারি সংস্থাগুলির যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ওষুধ সংস্থাগুলি খুব ভাল কাজ করছে। ১ মে থেকে ১৮ বছরের উপরে বয়স হলেই টিকা মিলবে। আগের মতোই সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে টিকা পাওয়া যাবে। দু’টি মেড ইন ইন্ডিয়া ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাদান অভিযান শুরু করেছে ভারত।”
করোনা আবহে ভিনরাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরমুখো রওনা হওয়ার বিষয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই বিষয়ে রাজ্যগুলির উচিত পরিযায়ী শ্রমিকদের আশ্বস্ত করা যে তাঁরা যেখানে আছেন আপাতত সেখানেই থাকুন। নিজের কর্মস্থলেই তাঁদের টিকা প্রদান করা হবে। আমি দেশবাসীর কাছে আরজি জানাচ্ছি, তাঁরা যেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। এই মুহূর্তে লকডাউন বলবৎ করার কোনও প্রশ্ন নেই। শিশু বন্ধুদের কাছে আমার আবেদন, তাঁরা যেন বাড়িতে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেন যাতে অপ্রয়োজনে বড়রাও বাড়ির বাইরে না যান।”
প্রসঙ্গত, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দেশের শীর্ষ ভ্যাকসিন নির্মাতাদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে বসেন মোদি। সেখানে টিকার উৎপাদন বাড়িয়ে তোলার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, করোনার (Corona) দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে টিকার হাহাকার। কিন্তু এর মধ্যেই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। জানা গিয়েছে, রাজ্যগুলিকে যে পরিমাণ টিকার (Corona Vaccine) ডোজ দেওয়া হয়েছিল, তার প্রায় ২৩ শতাংশ নষ্ট হয়েছে। তথ্য জানার অধিকারে এক আবেদনের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান সামনে এসেছে।
এদিন,অক্সিজেন ও ওষুধের জোগান নিয়ে আম জনতার মনোবল বাড়ালেও করোনা মোকাবিলার কোনও দাওয়াই ছিল না প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। ফলে মহামারী আতঙ্কের পরিবেশে সরকার কোন দিশায় হাঁটছে তা নমোর ভাষণে স্পষ্ট হল না।