অর্ণব আইচ: প্যান্ডেল হপিং করতে খুবই ভালবাসে বাঙালি। তাই করোনা আবহেও দুর্গাপুজোয় (Durga Puja News) ঘুরবেন অধিকাংশ। কেউ হেঁটেই ঘুরবেন। কিন্তু যাঁরা সপরিবার গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন? গাড়ি রেখে কি মণ্ডপে ঢুকতে হবে তাঁদের? নাহ, গাড়ির চাকা গড়ানোর মধ্যেই এবার মণ্ডপ, আলোকসজ্জা, প্রতিমা দেখে নিতে পারবেন তাঁরা। কারণ, গেট তো প্রায় উন্মুক্ত। আর এটাই ভাবাচ্ছে কলকাতা পুলিশকে। যানজটে জড়িয়ে যাবে না তো পুজোর কলকাতা?
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার বিশেষ কয়েকটি পয়েন্ট রয়েছে, যেখানে সাধারণত পুজোর সময় ভিড় হয়। এই পয়েন্টগুলি থেকেই মানুষ আশপাশের মণ্ডপগুলি দর্শন করেন। এই তালিকার মধ্যে রয়েছে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার ও হাতিবাগান, অথবা তেলেঙ্গাবাগান অঞ্চল। আছে মধ্য কলকাতার (Kolkata) কলেজ স্ট্রিট, যেখান থেকে একদিকে মহম্মদ আলি পার্ক, আবার অন্যদিকে কলেজ স্কোয়ারে যাওয়া যায়। রয়েছে শিয়ালদহ, যেখান থেকে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার ও শিয়ালদহে প্রতিমা দর্শন করতে যান বহু মানুষ। পুলিশ আধিকারিকদের মতে, গত কয়েক বছর ধরে পুজোয় দক্ষিণ কলকাতার দিকে ভিড় বাড়ছে। সেই কারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হয়ে উঠেছে রাসবিহারী মোড়। দেখা গিয়েছে, বড় সংখ্যক দর্শনার্থী কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে নেমেই পৌঁছে যান রাসবিহারী মোড়ে। এখান থেকেই একদিকে বাদামতলা-সহ কালীঘাট অঞ্চলের বেশ কয়েকটি মণ্ডপ, আবার অন্যদিকে নিউ আলিপুর, বেহালার দিকে যান দর্শনার্থীরা। রাসবিহারী থেকে পূর্বদিকে দেশপ্রিয় পার্ক থেকে শুরু করে কসবার দিকেও যান অনেকে। এ ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুর, বেহালা চৌরাস্তা, ঠাকুরপুকুর, অন্যদিকে দেশপ্রিয় পার্ক, গড়িয়াহাট মোড়, পাক সার্কাস, কসবা অঞ্চলেও পুজোর জন্য কলকাতায় তৈরি হচ্ছে ট্রাফিকের বিশেষ জোন।
[আরও পড়ুন: কোভিড আবহেই শহরে ককলিয়ার ইমপ্লান্ট, দু’বছর পর ঢাকের আওয়াজ শুনবেন সুনীলবাবু]
দেশপ্রিয় পার্ক থেকে ত্রিধারা ও চক্রবেড়িয়ার দিকে ঠাকুর দেখতে যান বহু মানুষ। আবার গড়িয়াহাট থেকে একডালিয়া, সিংহি পার্ক, হিন্দুস্থান পার্ক ও কসবা অঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় মণ্ডল। ফলে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, রাসবিহারী কানেক্টর ও তার সংযোগস্থলগুলিতে যদি যানজট হয়, তবে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল অবরুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই কারণে দর্শনার্থীদের রাস্তায় নামতে দেওয়া যেমন হবে না, তেমনই তাঁরা যাতে দূরত্ব মেনে চলেন, তা দেখা হবে। এই পয়েন্টগুলিতে নির্ধারিত সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ গাড়ি চলার জন্য রাখা হয়। বাকি একাংশ রাস্তা পার হওয়ার জন্য। পুজোর সময় প্রায় ৬০০ পুলিশকর্মী থাকবেন রাসবিহারী ও সংলগ্ন জায়গায়। যাতে মণ্ডপ দর্শনার্থীরা যথেষ্ট পারস্পরিক দূরত্ব মেনে রাস্তা পারাপারের হন, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এদিকে, এই বছর করোনা পরিস্থিতিতে পুজো উদ্যোক্তারা খোলামেলা মণ্ডপ তৈরি করছেন, যাতে অনেকটা দূর থেকে প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জা দেখতে পান দর্শনার্থীরা। সেই ক্ষেত্রে যে মণ্ডপগুলি রাস্তার উপর, সেগুলি যাতে গাড়ি করেই দর্শনার্থীরা দেখতে পান সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।