shono
Advertisement

Breaking News

৯০২৪ মেগাওয়াট! গরমে রাজ্যে রেকর্ড গড়ল বিদ্যুতের চাহিদা

চাহিদার যোগান দিতে চাপ বাড়ছে বিদ্যুৎদপ্তরের উপর।
Posted: 02:42 PM Apr 20, 2023Updated: 02:42 PM Apr 20, 2023

সুদীপ রায়চৌধুরী: রাজ্যে তাপপ্রবাহে জ্বলছে গোটা বাংলা। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদ্যুতের চাহিদা। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলা চাহিদার যোগান দিতে চাপ বাড়ছে বিদ‌্যুৎ বণ্টন পরিষেবার উপর।

Advertisement

বুধবার রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘মঙ্গলবার গোটা রাজ্যে বিদ‌্যুতের চাহিদা পৌঁছেছিল ৯০২৪ মেগাওয়াট। যা সর্বকালীন রেকর্ড। আমরা গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই রেকর্ড চাহিদা পূরণ করে বাংলার ২ কোটি ২২ লক্ষ গ্রাহকদের সুষ্ঠুভাবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি।’’ তাঁর কথায়, এটা এখন পর্যন্ত স্বাধীনোত্তর বাংলায় সর্বকালীন রেকর্ড। এর আগের রেকর্ড ছিল ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট, ৭৮৩২ মেগাওয়াট। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বাধীনতোত্তর পর্বে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ এই চাহিদাকে মিটিয়ে গ্রাহকদের সুষ্ঠু ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ‌্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার জন‌্য রাজ‌্য বিদ‌্যুৎ উৎপাদন সংস্থা, রাজ‌্য বিদ‌্যুৎ সংবহন সংস্থা ও রাজ‌্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা-এই তিন সংস্থার কর্মী ও আধিকারিকদের যাবতীয় কৃতিত্ব দিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। এদিন মন্ত্রী বলেন, এই পরিসংখ‌্যান শুধুমাত্র রাজ‌্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার। এর মধ্যে সিইএসসির পরিসংখ‌্যানকে ধরা হয়নি। ‘‘ওই দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সিইএসসি-র সর্বোচ্চ চাহিদা পৌঁছায় ২৫২৪ মেগাওয়াটে। এটাও সিইএসসি-র ক্ষেত্রে সর্বকালীন রেকর্ড,’’ বলেছেন বিদ‌্যুৎমন্ত্রী।

[আরও পড়ুন: দু’দশক পর মহানন্দা অভয়ারণ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেখা, উচ্ছ্বসিত বন্যপ্রাণপ্রেমীরা]

রাজ‌্য বিদ‌্যুৎ দপ্তর সূত্রে খবর, তীব্র তাপপ্রবাহে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে বিদ‌্যুৎ পরিষেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে গত কয়েকদিন ধরে দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে টানা বৈঠক করে চলেছেন অরূপ বিশ্বাস। বুধবারও বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবনে প্রতিটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির ‘তাৎক্ষণিক যোগাযোগ ব্যবস্থা’ পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের সিএমডি পি ভি সেলিম-সহ অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা। সর্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সবার সঙ্গে একদফা আলোচনাও করেন বিদ‌্যুৎমন্ত্রী। বিদ‌্যুৎ দপ্তর সূত্রে খবর, বিদ‌্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ এলেই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে গোটা রাজ্যে ২৬০০টি ভ্রাম্যমাণ দল টহল দিচ্ছে। তারপরও অবশ‌্য সমস‌্যা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। সোমবার থেকে দফায় দফায় বিদ‌্যুৎ বিভ্রাটের অসন্তোষ দেখা দেয় হরিদেবপুরে। পরদিন সকালেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় মহাত্মা গান্ধী রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূল সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী। তাঁর আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। মঙ্গলবার রাতে ফের দীর্ঘক্ষণ ওই এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়া মাঝরাতে মহাত্মা গান্ধী রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় ৪৫ মিনিট অবরোধ চলার পর হরিদেবপুর থানার পুলিশ এসে রাত দুটো নাগাদ অবরোধ তুলে দেয়। এর আগে রবিবার পথ অবরোধ হয়েছিল বেলেঘাটার বারোয়ারিতলায়।

বিদ‌্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, এখনও পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ও জোগানে বিরোধ না থাকলেও বহু জায়গাতেই নথিভুক্ত চাহিদার থেকে বাড়তি বিদ্যুৎ বেআইনিভাবে টানা হচ্ছে। কোনও বাড়িতে এসি-র জন্য নির্দিষ্ট বিদ্যুতের যে চাহিদা নথিভুক্ত রয়েছে, বাড়তি এসি চলায়, তার থেকে বেশি বিদ‌্যুৎ খরচ হচ্ছে। পাশপাশি অন‌্যান‌্য গ‌্যাজেট ব‌্যবহারও হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে সে কথা জানানো হয় না। যার কারণে সংশ্লিষ্ট ট্রান্সফর্মার বা সাব-স্টেশন থেকে আসা ফিডার লাইনের উপরে বাড়তি চাপ পড়ছে। এক বিদ‌্যুৎ কর্তার কথায়, কোনও ট্রান্সফর্মারের যা ক্ষমতা, তার ১২ শতাংশের বেশি চাহিদা তৈরি হলেই ট্রান্সফর্মার বা ফিডার লাইন ‘ট্রিপ’ করে যায়। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে এই কারণেই। তিনি বলেন, সাধারণ ভাবে রাত ১১টা নাগাদ বিদ্যুতের সর্বাধিক চাহিদা ওঠে। সোমবার রাতে যে চাহিদা উঠেছিল রেকর্ড ৮৮৭০ মেগাওয়াটে। মঙ্গলবারের চাহিদা সেই রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, মার্চ মাস থেকেই রাজ্যের বোরো চাষ শুরু হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে থাকে। গরমে চাহিদা আরও বেড়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement