সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলোর অভাবে স্ট্রিট লাইটের নিচে বসে পড়াশোনা করতেন বিদ্যাসাগর মশাই। সে গল্প প্রায় প্রবাদপ্রতিম, অনুপ্রেরণারও। তবে দিন পেরলেও এই লড়াইয়ের যে শেষ নেই, তারই সাক্ষী থাকল মুজফফরনগর। বই-খাতা নেই। চকখড়ি দিয়ে দরজার গায়ে অনুশীলন করেই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯১.৮ শতাংশ নম্বর হাসিল করল এক ছাত্রী।
[ শ্লীলতাহানির চেষ্টা, গুরগাঁওয়ের রাস্তায় যুবককে জুতোপেটা মহিলাদের ]
সম্প্রতি দ্বাদশ শ্রেণির ফল প্রকাশ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। কৃতী ছাত্রীদের জন্য বিশেষ অর্থমূল্যের পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করেছে যোগী সরকার। কিন্তু সে তো ফলের পর। তার আগে ছিল অনেকটাই লড়াই, চাপা অন্ধকারের ইতিহাস। প্রায় প্রত্যেকটি পরীক্ষার পরই ছাত্র-ছাত্রীদের এরকম লড়াইয়ের গল্প সামনে আসে। প্রকাশ্যে আসে প্রতিকূলতা অতিক্রম করার বাস্তব কাহিনি। ঠিক সেরকমই সামনে এল মুজফফরনগরের এই কিশোরীর জীবনের কথা। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯১.৮ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়েছে সে। কিন্তু এই চমকপ্রদ ফলাফলের নেপথ্যের ইতিহাস জানলে চমকে উঠতে হয়। অন্য কৃতীরা যখন টেলিভিশনের পর্দায় জানাচ্ছে কতজন গৃহশিক্ষক ছিল, কিংবা দিনে কত ঘণ্টা পড়ত বা কোন প্রকাশনীর সহায়িকা পড়েছে, এ মেয়ে তখন জানাচ্ছে, অনুশীলন করার মতো খাতাই ছিল না তাঁর কাছে। জানা যাচ্ছে, ওই ছাত্রীর নাম মীনাক্ষী। মুজফরনগরের বাসিন্দা সে। পরিবার এতটাই দরিদ্র যে পড়াশোনার খরচ বহন করা সম্ভব। বই-খাতা জোগাড় করতে পারেনি সে। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্রীও নয় মীনাক্ষী। বাড়ির দরজার গায়েই চক দিয়ে অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছে। বই নেই তো কী হয়েছে! দ্বারস্থ হয়েছে পাঠাগারের। চেয়েচিন্তে বই জোগাড় করেই চালিয়ে গিয়েছে পড়াশোনা। সরস্বতী অবশ্য তার প্রতি অকৃপণ হননি। যতটা লড়াই সে করেছে, ততটাই পুরস্কার যেন সে ফিরেও পেয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় সে পেল ৯১.৮ শতাংশ নম্বর। অনেক সচ্ছল পরিবারের সন্তানও সমস্ত সুবিধা পেয়েও এতটা কৃতী হতে পারে না। এখানেই ব্যতিক্রমী মীনাক্ষী। লড়াই করলে যদি সত্যি একদিন জয়ী হওয়া যায়, সে যেন আবার গোটা দেশকে বুঝিয়ে দিল।
The post বই-খাতা নেই, দরজার গায়ে অনুশীলন করেই ৯১.৮ শতাংশ হাসিল ছাত্রীর appeared first on Sangbad Pratidin.