রমেন দাস: অল্প নয়, এক নিমেষেই আড়াই গুণ! ভর্তি ফি বৃদ্ধির এমন প্রস্তাবেই চাঞ্চল্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিযোগ, গাজোয়ারি করে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি বাড়াতে চলেছে কর্তৃপক্ষ! আর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছে এসএফআই (SFI)। প্রায় একই সুরে কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদও।
ঠিক কী অভিযোগ? বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় (Presidency University) কর্তৃপক্ষের তরফে একটি ফি পুনর্মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় খতিয়ে দেখে প্রস্তাব দিয়েছে ফি বৃদ্ধির! যে ফি বৃদ্ধির বহর ভয়ানক বলেই অভিযোগ। দাবি, স্নাতক স্তরে ভর্তি ফি ছিল ৪২০৫ টাকা। নয়া প্রস্তাবে সেটা বেড়ে হতে পারে ৭২০০ টাকা। আবার স্নাতকোত্তর স্তরে ৪৩০০ থেকে যা বেড়ে হতে পারে ৭২০০ টাকা। অন্যদিকে পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে সেমিস্টার ফি-তেও। কলা বিভাগের ক্ষেত্রে ১১০০ টাকা থেকে বেড়ে নতুন সেমিস্টার ফি হতে পারে ৩২০০ টাকা। আবার বিজ্ঞানে সেই পরিমাণ ১১২৫ থেকে ৩২০০ করা হতে পারে। অন্যদিকে স্নাতকোত্তর স্তরে কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগেও সেমিস্টার ফি হতে পারে ৩২০০ টাকা।
[আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন দেখে হাসিনার চোখে জল]
বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এই প্রস্তাবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং এসএফআই নেতা বিতান ইসলামের অভিযোগ, "১৮ জুলাই আমাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের তৈরি ওই কমিটির বৈঠক হয়। আমরা ফি বৃদ্ধি না করে বিকল্প পথে আয় বাড়ানোর কথা বলি। কিন্তু সেই বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়নি। বরং ছাত্রছাত্রীদের কথা না ভেবে, এক ধাক্কায় বিপুল পরিমাণে ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা মানতে পারছি না আমরা। পড়াশোনার জন্য এই বিপুল বোঝা পড়ুয়াদের উপর আসবে, এই বিষয়টি মানা যায় না।" অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসেছেন বিতান ইসলামরা। দাবি, "এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা ভর্তি ফি না কমালে অবস্থান চালাবে এসএফআই।" প্রয়োজনে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্রনেতারা।
এই বিষয়ে পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। তিনি জানান, "আমরা সর্বদা ছাত্রছাত্রীদের পাশে। কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবেন।'' যদিও ছাত্রদের দাবির কথা স্বীকার করেই ওই মূল্যায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণ কুমার মাইতির দাবি, "বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। ছাত্ররা সব জানেন। আমরা কথা বলছি। আলাপ, আলোচনা চলছে। বাকি বিস্তারিত বলতে পারব না এখনই।"