সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাল, ভুয়ো ডাক্তারদের বাড়বাড়ন্তে এ রাজ্যে চিকিৎসকদের একাংশের প্রতি আস্থা ক্রমশ কমছে। এই অনাস্থার আবহে স্বস্তির ছবি মহারাষ্ট্রের পুণেতে। এ শহরের এক চিকিৎসক মাত্র ৩০ টাকায় চিকিৎসা করান। রোজগারের প্রায় পুরোটাই তিনি দুঃস্থদের হাতে তুলে দেন। প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা চেম্বারে কাটান। সপ্তাহের সাতদিনই তাঁর চেম্বারের দরজা রোগীদের জন্য খোলা। গত ৭৫ বছর ধরে এটাই তাঁর রুটিন। ভদ্রলোকের নাম বলবন্ত ঘাটপাণ্ডে। ১০২ বছরের বলবন্তকে এযুগের ‘অগ্নিশ্বর’ বলে মানেন পুণের মানুষ।
[বাংলার মহিলাকে ২৫ সপ্তাহে গর্ভপাতের অনুমতি সুপ্রিম কোর্টের]
বাবা, ঠাকুরদা সবাই ডাক্তার। বংশানুক্রমে বলবন্ত ঘাটপাণ্ডেও চিকিৎসক। এই পর্যন্ত গল্প আর পাঁচজনের মতো। তবে এই ডাক্তার অনেকের থেকে আলাদা। ১০২ বছরের বলবন্ত ঘাটপাণ্ডের জীবনে কোনও ছুটি নেই। দেশের অন্যতম প্রবীণ এই চিকিৎসকের হাতযশের সাক্ষী পুণের বহু মানুষ। শতায়ু বলবন্ত বলছেন, অবসর তাঁর ধাতে নেই। আমৃত্যু প্র্যাকটিস চালিয়ে যেতে চান। এই বয়সেও প্রতিদিন তিনি ১০ ঘণ্টা ধরে রোগী দেখেন। সপ্তাহে কোনও দিন ছুটি নেই। মাত্র ৩০ টাকায় চিকিৎসা করান। কারও থেকে কিছুই নেন না। উপার্জনের অর্থের প্রায় পুরোটাই বিলিয়ে দেন এই জেনারেল ফিজিশিয়ান। এই বয়সেও কীভাবে কাজটা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রবীণের জবাব, সমাজে চিকিৎসকদের এখনও মর্যাদার আসনে বসানো হয়। এক্ষেত্রে সরাসরি মানুষকে সেবা করার সুযোগ মেলে। একজন সুস্থ করতে পারলে কতটা আনন্দ মেলে সেটা একজন চিকিৎসকই জানেন।
[বিমানে অভাব অক্সিজেনের, শ্বাসকষ্ট নিয়েই সফর যাত্রীদের]
বলবন্তের কথায় এই পেশা থেকে তিনি অনেক সম্মান পেয়েছেন। কিছু ফিরিয়ে দিতে মানুষের পাশে থাকতে চান। ছেলে সাওয়ান্দ বলেন, বাবার কাছে চিকিৎসা ছাড়া দুনিয়ার কোনও কিছুতে আগ্রহ নেই। মানুষের সেবাই তাঁর কাছে আবেগ, ভালবাসা। বলবন্তের নাতির বক্তব্য, দাদু একেবারে কাজপাগল। রোগী দেখা শেষ হলে মেডিক্যাল জার্নাল এবং খবরের কাগজে হারিয়ে যান বলবন্ত। একদম শৃঙ্খলায় মোড়া জীবন। সকালে উঠে এক ঘণ্টা ব্যায়াম। তারপর খবরের কাগজে চোখ বোলানো। প্রতিদিন ঠান্ডা জলে স্নান করে তিনি দিব্যি রয়েছেন। গত ২২ বছরে একবারও অসুস্থ হননি। নিয়মিত ব্যায়াম এবং ঠিকমতো খাদ্যাভ্যাস এর রহস্য। ১৯৪১ থেকে টানা রোগী দেখে চলেছেন। শতায়ুর কথায়, এখন মানুষের অসুস্থতা বদলে যাচ্ছে। খাবারের মান এবং খাদ্যাভ্যাসের জন্য নতুন কিছু রোগের আমদানি হয়েছে। শতায়ুর আক্ষেপ, কথায় কথায় এখন সবাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চলে যান। এর ফলে বেশ কিছু পুরনো ওষুধ হারিয়ে যাচ্ছে। নতুন ওষুধ ব্যবহার করেন না বলবন্ত। পুরনোতেই তাঁর ভরসা। গত ৩৫ বছর ধরে পুণের এই চিকিৎসকের ভরসায় বেঁচে রয়েছেন রাজপাঠক ঘনশ্যাম। তিনি বলছেন, লক্ষ্মণ দেখেই রোগ ধরেন ডাক্তারবাবু। নামমাত্র ওষুধেই কাজ হয়ে যায়। অন্য ডাক্তারদের মতো অজস্র পরীক্ষা করেন না। এভাবে মূল্যবোধ ধরে রেখেছেন বলবন্ত। সাধারণ মানুষ এজন্যই তো তাঁদের ভগবানের আসনে বসান।
The post ১০০ পেরনো এই চিকিৎসকের কীর্তিতে গর্বিত দেশ appeared first on Sangbad Pratidin.