অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে (Purbasthali) বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য। ওই তরুণীকে মারধর করে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন। স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেওয়াতেই তাঁকে খুন (Killed) করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম জেসমিনা বিবি (২৫)। তাঁর শ্বশুরবাড়ি এলাকার বরজপোতা গ্রামে। গত শুক্রবার দুপুরে জেসমিনাকে অসুস্থ অবস্থায় পূর্বস্থলী হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নবদ্বীপের প্রতাপনগর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। রবিবার শক্তিনগর হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। জেসমিনার বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, তাঁদের মেয়েকে মারধর করে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সঙ্গ দিল না শরীর, ৫ দিনেই অনশন প্রত্যাহার করে হাসপাতালে ভরতি অসুস্থ বিমল গুরুং]
বধূর কাকা কাদের আলি শেখ বলেন, “ভাইঝির স্বামী জাহাঙ্গীর শেখের সঙ্গে অন্য একটি মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণেই বিয়ের পর থেকে ভাইঝির সঙ্গে অশান্তি চলছিল। তাঁকে মারধর করা হত। শুক্রবার ভাইঝিকে মারধর করে জোর করে বিষ খাইয়ে দেয় জাহাঙ্গীর ও পরিবারের অন্যরা। আমরা থানায় অভিযোগ জানাব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলী থানার বাবুইডাঙার বাসিন্দা জেসমিনার সঙ্গে তিন বছর আগে বিয়ে হয় বরজপোতা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর শেখের। তাদের দেড় বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বিয়ের পর থেকে দম্পতির মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। ক্রমশ তা বাড়তে থাকে।একই দাবি করেছেন, বধূর বাপের বাড়ির লোকেরাও। তাঁরা জানান, শুক্রবার ফোনে তাঁদের জেসমিনার অসুস্থতার খবর জানানো হয়। দ্রুত প্রতাপনগর হাসপাতালে ছুটে যান তাঁরা। পরিবারের দাবি, জেসমিনা তাঁদের জানিয়েছেন তাঁকে মারধর করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন জোর করে বিষ খাইয়ে দেয়।
[আরও পড়ুন: GTA নির্বাচনের আগে ফের উত্তরবঙ্গ সফরে মমতা, জুনে ঠাসা কর্মসূচির কথা জানালেন নিজেই]
জেসমিনার আরেক কাকা মিলন শেখ বলেন, “বিয়ের পর থেকেই ভাইঝিকে মারধর করা হত, খেতে না দেওয়ার মতো পাশবিক অত্যাচার চালাত জাহাঙ্গীর। মাঝে দু’মাস সে বাপের বাড়িতে ফিরেছিল। এই নিয়ে জেসমিনার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথাবার্তাও হয়।” মৃতা কাকা দাবি করেন, “অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে ভাইঝি জাহাঙ্গীরকে চাপ দিয়েছিল। এতে উলটে জাহাঙ্গীর জানায়, বাপের বাড়ি থেকে দশ লক্ষ টাকা আনলে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসবে। তারপরে এই ঘটনা।”