shono
Advertisement

জাল কাগজে কর ফাঁকি দিয়ে ৪৩ কোটি টাকার জালিয়াতি, গ্রেপ্তার চক্রের তিন মাথা

কারখানার ঠিকানায় ভাড়ার ঘর! The post জাল কাগজে কর ফাঁকি দিয়ে ৪৩ কোটি টাকার জালিয়াতি, গ্রেপ্তার চক্রের তিন মাথা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:06 PM Jun 29, 2018Updated: 08:36 PM Jun 29, 2018

অর্ণব আইচ: খাতায় কলমে লোহার জিনিসপত্র তৈরির কারখানা। কিন্তু কোথায় কী? এ যে বসতবাড়ি! গাদাগাদি করে ভাড়াটেদের বাস!

Advertisement

হুগলির উত্তরপাড়ায় ওই ঠিকানায় গিয়ে হাঁ হয়ে গিয়েছেন গোয়েন্দারা। সরকারি নথি বলছে, ওই কারখানা থেকে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয়। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেন হাওড়া সিজিএসটি কমিশনারেটের আধিকারিকরা। শেষপর্যন্ত ঝুলি থেকে বের হল বেড়াল। কেন্দ্রীয় জিএসটি ফাঁকি দিয়ে জালিয়াতির জাল ছড়ানো হয়েছিল হাওড়া ও হুগলিতে। ৪৩ কোটি টাকার জালিয়াতির পর্দা ফাঁস করল হাওড়া সিজিএসটি কমিশনারেট। এই চক্রের মাথা সুমন্ত দাস ও তাঁর দুই সঙ্গী স্বপন শাসমল ও মলয়কুমার নাথকে উত্তরপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, জাল নথির সাহায্যে দুই জেলার ৬৩ জন ব্যবসায়ীকে এই কর ফাঁকি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন সুমন্ত। ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তিনজনকে ১৪ দিনের জেল হেফজাতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

[রাজ্যের নিরাপত্তা ছাড়লেন বাবুল, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জেলাশাসকের]

মধ্য কলকাতার স্ট্র‌্যান্ড রোডে কেন্দ্রীয় জিএসটির দপ্তর থেকে চলছিল নজরদারি। হাওড়া সিজিএসটি কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের ‘সিস্টেম নেটওয়ার্ক’-এ একটি সংস্থার লেনদেনে গরমিল ধরা পড়ে। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, সেইমতো গোয়েন্দারা হানা দেন উত্তরপাড়ার শাসমল অ্যান্ড নাথ ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার অফিসে। খাতায়-কলমে দেখানো হয়েছে, কয়েক কোটি টাকার লোহার জিনিসপত্র সরবরাহ করে ওই সংস্থা। সেইমতো কারখানাও থাকা উচিৎ তাদের। কিন্তু ওই ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায়, একটি ঘর ভাড়া নিয়ে রয়েছেন কয়েকজন শ্রমিক। এতে সন্দেহ আরও বাড়ে গোয়েন্দাদের। তাঁরা সংস্থাটির সম্পর্কে
খোঁজখবর নেন। সংস্থার দুই অধিকর্তার বাড়িতে হানা দেন তাঁরা। জেরা শুরু হয় স্বপন শাসমল ও মলয়কুমার নাথ নামে দুই অধিকর্তাকে। জেরার মুখে দুই অধিকর্তাই স্বীকার করেন যে, তাঁদের মধ্যে একজন কলের মিস্ত্রি। আরেকজন মার্বেল মিস্ত্রি। সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে দু’জনকে ওই সংস্থার অধিকর্তা বানিয়েছেন উত্তরপাড়ারই বাসিন্দা সুমন্ত দাস। হাওড়া ও হুগলিতে কর পরামর্শদাতা বলে পরিচিত সুমন্তর বাড়িতে চলে তল্লাশি। উদ্ধার হয় কম্পিউটার ও বেশ কিছু জাল কাগজপত্র।

গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, এজেন্টদের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন সুমন্ত। ওই এজেন্টরা হাওড়া ও হুগলির ব্যবসায়ীদের বলত, কেন্দ্রীয় জিএসটি ফাঁকি দেওয়ার উপায় আছে। শুধু খাতায়-কলমে শাসমল অ্যান্ড নাথ সংস্থার কাছ থেকে জিনিসপত্র নিতে হবে। তার বদলে ওই সংস্থা ব্যবসায়ীকে দেবে একটি জাল ‘ইনভয়েস’। সেই ‘ইনভয়েস’ প্রমাণ দেবে যে কেন্দ্রীয় জিএসটি দিয়েছেন ব্যবসায়ী। শুধু জাল ‘ইনভয়েস’-এ যে বিল হবে, সেই টাকা প্রাথমিকভাবে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে হবে। একদিনের মধ্যে ব্যবসায়ী ওই টাকা নিজের অন্য অ্যাকাউন্টে ‘ট্রান্সফার’ও করে দিতে পারবেন। শুধু তার বদলে ৪ শতাংশ কমিশন দিতে হবে শাসমল অ্যান্ড নাথ নামে ওই ভুয়া সংস্থাটিকে। আসলে ওই কমিশনের টাকা পৌঁছত সুমন্তর হাতেই। সুমন্ত ওই টাকার কিছুটা অংশ দিত এজেন্টদের। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, হাওড়া ও হুগলির ৬৩ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়েছেন সুমন্ত। প্রায় ২০০ কোটি টাকার লেনদেন দেখানো হয়েছে, যার মধ্যে ৪৩ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়ে প্রতারণা করেছে চক্রটি। ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও গোয়েন্দারা যোগাযোগ করেন। যদিও কমিশনারেট সূত্রের খবর, ব্যবসায়ীরা ফাঁকি দেওয়া কর ফেরত দিতে শুরু করেছেন। আরও ব্যবসায়ীদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[টিউশন পড়তে গিয়ে বন্ধুর সঙ্গে মারামারি, বোতলের আঘাতে ছাত্রের মৃত্যু]

The post জাল কাগজে কর ফাঁকি দিয়ে ৪৩ কোটি টাকার জালিয়াতি, গ্রেপ্তার চক্রের তিন মাথা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার