সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক কী ভাবছিলেন ছত্তিশগড়ের ছয় থেকে দশ নম্বর ব্যাটসম্যান? এটা হতে পারে, অশোক দিন্দা আর মহম্মদ সামির আগুনে স্পেলের সামনে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে লড়াই করা। অথবা এমনটাও হতে পারে, অনেক লড়াই হয়েছে। এবার চোট আঘাত না পেয়ে ম্যাচ শেষ করতে পারলেই হল। তাঁদের মাথাতে হয়তো একবারও আসেনি, বাংলার বিরুদ্ধে কোনও পয়েন্ট পেতে পারেন।
[ভিভ রিচার্ডসের ৩৩ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন এই অজি ব্যাটসম্যান]
আসবেই বা কী করে, তৃতীয় দিনের শেষ বাংলার দুই পেসার যেভাবে আগুনে গতিতে বল ছোটালেন, এবং চতুর্থ দিনের মাথাতেও যেভাবে ধারাবাহিকভাবে সেই স্পেল বজায় রাখলেন, তাতে হয়তো এমন চিন্তাই খুব স্বাভাবিক। দুই বঙ্গ পেসারের দাপটেই রনজির প্রথম দুই ম্যাচে দশ পয়েন্ট ঢুকল বাংলার ঘরে। সার্ভিসেসের বিরুদ্ধে তিন। ছত্তিশগড়ের বিরুদ্ধে পুরো সাত।
সার্ভিসেসের বিরুদ্ধে খুব খারাপ খেলেননি দিন্দারা। কিন্তু পুরো পয়েন্ট জোটেনি কপালে। টুকটাক ভুল শুধরে তাই তারা ছত্তিশগড়ের বিরুদ্ধে পুরো পয়েন্টের জন্য ঝাঁপিয়েছিল। তৃতীয় দিনের শেষে বাংলার পাহাড় প্রমাণ রান তাড়া করতে নেমে পাঁচ উইকেট খুইয়ে বসেছিল ছত্তিশগড়। সাত পয়েন্ট কার্যত তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়। এরপর আলোচনা শুরু হয়ে যায়। সোশ্যাল সাইটগুলিতে বলা হতে থাকে, পুরো পয়েন্ট থেকে বাংলা আর মাত্র পাঁচটা ভাল বল দূরে।
[কলম্বিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যুব বিশ্বকাপের শেষ আটে জার্মানি]
সামি আর দিন্দা সেই আলোচনাগুলিই দেখেছিলেন কি না বলা মুশকিল, তবে তারা সেই পথেই হাঁটলেন। খুব বেশিক্ষণ না। ছত্তিশগড়ের লোয়ার মিডল অর্ডার ও টেল এন্ডারদের চোখ থেকে ঘুম সরে যাওয়ার আগেই দু’জনে মিলে সবাইকে ড্রেসিংরুমে পাঠিয়ে দিলেন। খুব বেশি হলে সময় নিলেন আধঘণ্টা থেকে পয়তাল্লিশ মিনিট। মহম্মদ সামি প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি নিলেন আরও ছয়। সব মিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে ঢুকল ৮ উইকেট। ছত্তিশগড়ের তারকা ব্যাটসম্যান বলতে দু’জন। ভারতের হয়ে খেলা মহম্মদ কাইফ ও আমনদীপ খাড়ে। দ্বিতীয়জনের গতবারের রনজি মরশুমটা দুর্দান্ত গিয়েছিল। কিন্তু তারকার কেউই দশ রানের গণ্ডি টপকাতে পারলেন না। খাড়েকে দুই ইনিংসেই শূন্য করে ফেরত পাঠালেন সামি। মহম্মদ কাইফ প্রথম ইনিংসে শূন্য করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন মোটে তিন। তাঁকেও দু’বার প্যাভিলিয়নে ফেরার পথ দেখালেন সামিই।
এক তারকা পেসারকেই সামলাতে যখন নাজেহাল হতে হয়েছে, তখন দিন্দাও চড়া মেজাজে দেখা দিলেন। প্রথম ইনিংসে তিনিই ছত্তিশগড়ের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভাঙেন। নিয়েছিলেন সাত উইকেট। তারপর মঙ্গলবার, সোয়া তিন দিনের মাথায় আরও তিন। সব মিলিয়ে দশ উইকেট।
বঙ্গ পেসার দশ উইকেট পেতেই পরিসংখ্যান ঘাঁটা শুরু হয়ে যায়। শততম ম্যাচে দিন্দার আগে দশ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব কার রয়েছে। দেখা যায়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের সেঞ্চুরি ম্যাচে দশ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব ছিল একমাত্র এরাপল্লী প্রসন্নর। তারপরেই অশোক দিন্দা। ম্যাচের সেরাও তিনি। আপাতত বিশ্রাম। দিওয়ালির উপহার ঘরে চলে এসেছে। ক্রিকেটারদের ছুটি দেওয়া হবে। তারপর আসন্ন দু’টি ম্যাচের প্রস্তুতি। বাংলার আসন্ন দু’টি ম্যাচই ঘরের মাঠে। সেখানে প্রতিপক্ষ বিদর্ভ ও হিমাচল প্রদেশ। ঘরের মাঠে ব্যাপারটা কী সহজ হবে? বাংলা শিবির সেসব নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাতে নারাজ। কারণ দিন্দাদের তো এখন পার্টি টাইম।
[গোল্ড কাপের পুরস্কার অর্থ সিকিম ফুটবল সংস্থাকে দান মোহনবাগানের]
The post দিন্দা-সামির আগুনে স্পেলে ছারখার কাইফরা, সাত পয়েন্ট বাংলার appeared first on Sangbad Pratidin.