সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবারও কংগ্রেস সভাপতির (Congress President) চেয়ারে দেখা যাবে সোনিয়াপুত্রকে? শনিবার দলের বৈঠকের পর এই জল্পনা ছড়িয়ে পড়ল রাহুল গান্ধীর একটি মন্তব্যেই। বৈঠক শেষে তিনি বললেন, ”সবাই চাইছেন, তাই দলের কাজ করতে আমি তৈরি।” তাঁর এই মন্তব্যের পর সমবেত করতালির শব্দই বুঝিয়ে দিল, রাহুলকে ফের কংগ্রেস সভাপতি পদে চাইছেন দলের সিংহভাগ নেতাই। নতুন বছরের গোড়ায় সেই প্রক্রিয়ায় আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়তে পারে বলে আশা দেখছেন কংগ্রেস নেতারা।
সম্প্রতি দলের ভিতরে, বাইরে চাপে জেরবার কংগ্রেস। উনিশের লোকসভা ভোট এবং তার পরবর্তী বিভিন্ন রাজ্যে নানা স্তরের ভোটে হারের ব্যর্থতা ঘাড়ে নিয়ে সভাপতির পদ ছেড়েছেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। আপাতত সোনিয়া গান্ধী দলের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে কাজ চালাচ্ছেন। তবে তিনি ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দায়িত্ব সামলাতে কার্যত অপারগ। দিশাহীন নেতৃত্ব। দলের মধ্যে ফাটল। বহু বর্ষীয়ান নেতাই দলের ফাঁকফোকর তুলে ধরছেন প্রকাশ্যে। অন্দরে বিদ্রোহের সুর আরও চড়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন সোনিয়া গান্ধী। ছিলেন রাহুল, প্রিয়াঙ্কা ও দলের বেশ কয়েকজন নেতাও। এদিন কার্যত ম্যারাথন বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, টানা প্রায় ৭ ঘণ্টার বৈঠকে বেশিরভাগ ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা নাকি রাহুলের সমর্থনে কথা বলেছেন। দলের রাশ তাঁরা রাহুলের হাতে দিতে চান।
[আরও পড়ুন: মিথ্যা মামলা থেকে ভ্যাকসিন নির্মাতাদের সুরক্ষা দিক সরকার, দাবি সেরাম কর্তার]
এই অবস্থায় আর ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে থাকতে পারেননি রাজীবতনয়। আলোচনার পর রাহুল তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ”আপনারা সবাই চাইছেন যখন, তখন আমি দলের কাজ করতে তৈরি।” সোনিয়া গান্ধীর অসুস্থতার পর দ্রুতই দলে সভাপতি নির্বাচন প্রয়োজন। রাহুল গান্ধীর শনিবারের মন্তব্যে সেই কাজ খুব কঠিন হবে না বলেই মনে করছেন কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা। এদিকে, আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। এবার বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বেন অধীর চৌধুরীরা। তার আগে রাহুলের বাংলায় প্রচারে আসার কথা। তিনি দলের সভাপতি হলে, তাঁর নেতৃত্বে লড়াইয়ে আরও জোর পাবে প্রদেশ কংগ্রেস, এমনই বলছেন নেতারা। ফলে রাহুলের ফের কংগ্রেস সভাপতির পদে নানা দিক থেকেই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
[আরও পড়ুন: ওড়িশাতেও ‘লাভ জেহাদে’র ছায়া! ধর্ম বদলে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ]
রাহুলকে নিয়ে যখন আশা কংগ্রেসের অন্দরে, ঠিক তখনই ফের ছায়া ফেলল ছাত্র সংগঠনের ভাঙন। সংগঠন ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন রাহুল ঘনিষ্ঠ NSUI নেত্রী রুচি গুপ্তা। ইস্তফাপত্রে তিনি জানিয়েছেন, সাংগঠনিক রদবদলে এত দেরি হওয়ায় তিনি বিরক্ত। তাই আর থাকতে পারছেন না। রুচি ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (NSUI) যুগ্ম সভানেত্রী ছিলেন এবং রাহুল গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ছাত্র সংগঠনে তাঁকে ভরসা করে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি রাহুল এবং সোনিয়া গান্ধীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।