মণিশংকর চৌধুরী: রবিবার রাজ্যের সব রাস্তা এসে মিশে গিয়েছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে (Brigade Parade Ground )। আসন্ন বিধানসভা ভোটই পাখির চোখ। সেই দিকে তাকিয়ে কংগ্রেসের হাত ধরে ব্রিগেডের ময়দানে বামেরা। বাম (Left Front) এবং কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে ব্রিগেডের মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টও (ISF)। নজিরবিহীন এই ব্রিগেড সমাবেশে হাজির ওঁরাও। নিজেদের সংগ্রাম, দাবির কথা তুলে ধরার জন্যই আজ তাঁরা এসেছেন এই লক্ষ লোকের সমাবেশে।
সমাজের চোখে তাঁরা রূপান্তরকামী। সমাজে তাঁদের অবস্থান নিয়ে রয়েছে প্রশ্নচিহ্ন। সেই কারণে নিজেদের অধিকারের দাবি নিয়ে ব্রিগেডে এসেছেন সোনারপুরের অন্বেষা ও রুবি হাসপাতালের কাছে থাকা বাপন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলার সময়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজের ছাত্র অন্বেষা বললেন, “এ দেশে হিন্দু, মুসলিম, শিখ-সহ একাধিক সম্প্রদায়ের মানুষ থাকেন। সেই দেশকেই হিন্দু দেশ বলে দাগিয়ে দেওয়ার বিরোধী আমরা।”
[আরও খবর: ‘মমতাকে জিরো করে দেব’, ব্রিগেড থেকে ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’ জয়ের হুঙ্কার আব্বাসের]
ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে এ বঙ্গে। রাজ্য দখল করতে মরিয়া বিজেপি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে তোপ দাগছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। এরকম এক পরিস্থিতিতে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের ডাকা সমাবেশে উপস্থিত হয়ে অন্বেষার সঙ্গী বাপন বলছেন, “খাদ্য, শিক্ষা, কর্ম, এই তিনটি মৌলিক অধিকারের দাবিতেই আজ আমরা এখানে এসেছি। কোথায় যেন মনে হচ্ছে, আমাদের পরিচিতি চাপা পড়ে যাচ্ছে। এই পরিবেশে আমাদের বেমানান বলেই মনে হচ্ছে। সবকিছুতেই আমাদের সামনে একটা প্রশ্নচিহ্ন। আমরা কোন লিঙ্গের, আমাদের পরিচয় কী?”
এবারই ব্রিগেডে তাঁরা প্রথম, এমন নয়। অতীতেও এসেছেন। এদিনও প্রিয় দলের টান উপেক্ষা করতে পারেননি। অন্বেষার বক্তব্য, “একমাত্র বামেরাই পারে খাদ্য,কর্ম, শিক্ষার সুরক্ষা দিতে। কর্মী, শ্রমিকদের জন্য লড়াই করে বামেরাই। সেই কারণেই বামেদের প্রতি আমাদের ভালবাসা।”
এক নতুন ভোরের সন্ধানে অন্বেষা-বাপনের মতো রূপান্তরকামীরা। পছন্দের রাজনৈতিক দল সরকার গড়লে কি তাঁদের অবস্থার সুরাহা হবে? মিলবে কি খাদ্য-শিক্ষা-কর্মের অধিকার? উত্তর দেবে সময়।
[আরও পড়ুন: ‘লুঠপাট-জাতপাতের নয়, বাংলায় চাই জনহিতের সরকার’, ব্রিগেড থেকে ‘বদলের’ ডাক ইয়েচুরির]
দেখুন ভিডিও: