নব্যেন্দু হাজরা: ভোজনরশিক বাঙালি। বিশেষ অনুষ্ঠানে-পার্বণে পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পেটপুজো না হলে কি চলে। আর যদি সেই পার্বণ হয় জামাইষষ্ঠী, তবে তো কথাই নেই। জামাই আদরে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, তাই বন্ধ থাকা রেস্তরাঁতেও শুরু হয়েছে বুকিং!
বিজ্ঞপ্তি না বেরলেও আপাতত ঠিক আছে ১৬ জুন থেকেই খুলে যাবে শহরের নামী-দামী হোটেল-রেস্তরাঁ। সেই মতোই সাজানো গোজানোর প্রস্তুতি চলছে। আর ওইদিনই জামাইষষ্ঠী। তাই ইতিমধ্যেই আগে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে টেবিল বুকিং। এবার আর দুপুরের ভুরিভোজ নয়, সন্ধে অথবা রাতের খাবারের জন্যই হচ্ছে টেবিল বুকিং। তবে রেস্তরাঁর মালিকরা জানাচ্ছেন, ওইদিন রেস্তরাঁ খুলছে ধরে নিয়েই প্রচুর মানুষ আগে থেকে বুকিং করে রাখছেন। ক্রেতার নামে টেবিল বুক করলেও যদিও এখনই কনফার্ম করা হচ্ছে না। সেটা আগের দিন জানানো হবে। সেই সঙ্গে জানানো হবে মেনুও। কারণ, ওইদিন থেকে রেস্তরাঁ খোলার ক্ষেত্রে এখনও সরকারি কোনও বিজ্ঞপ্তি আসেনি। সেটা হাতে পেলেই কনফার্ম করা সম্ভব হবে।
[আরও পড়ুন: বাঙালির জনপ্রিয় পদ রান্না করে Youtube তারকা বীরভূমের বৃদ্ধা, আয় কত জানেন?]
বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা। এই সময়ের মধ্যেও একাধিক নিয়ম নীতি মেনেই খুলবে হোটেল-রেস্তরাঁ। সূত্রের খবর, ১৬ জুন যেমন শপিং মল খোলার কথা, তেমনই খুলতে পারে রেস্তরাঁ। আর দিনটা জামাইষষ্ঠীর হওয়ায় একদিকে যেমন খুশি মালিকরা, তেমনই খুশি শাশুড়ি-জামাইরাও। বিগত কয়েক বছর ধরেই কলকাতার (Kolkata) নামী-দামি রেস্তরাঁ-হোটেলেই জামাইআদর সারেন বহু শাশুড়ি। বাড়িতে রান্নার ঝামেলা থেকে নিস্তার পেতেই হোটেলে সিট বুক করে জামাই আতিথেয়তা সারেন তাঁরা। কিন্তু গতবছর জামাইষষ্ঠীর সময় বন্ধ ছিল সব রেস্তরাঁ। ফলে ভালমন্দ খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন জামাইরা। কিন্তু এবার বিধিনিষেধের মধ্যেও ওইদিন থেকেই রেস্তরাঁ খোলার কথা। তাই হাসি ফুটেছে সকলের মুখেই।
হোটেল মালিকদের বক্তব্য, “সারা বছর তো ব্যবসা হয়ই। কিন্তু জামাইষষ্ঠীর দিন প্রচুর কাস্টমার। ওইদিনের মেনুও আলাদা। গতবছর করোনার (Corona virus) জন্য এই বিশেষ দিন রেস্তরাঁ বন্ধ থাকায় প্রচুর টাকা লোকসান হয়েছে। কিন্তু এবার তো খুলে যাবে মনে হচ্ছে। সেই মতোই আমরা মেনু বানাচ্ছি। আশা করছি ব্যবসা ভালই হবে।”তবে যেদিনই খোলা হোক, সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রেখে, মাস্ক-স্যানিটাইজার ব্যবহার করেই চলবে রেস্তরাঁ। দূরত্ব মেনে ৫০ শতাংশ চেয়ার-টেবিল দিয়ে সাজানো হচ্ছে খাবার জায়গা। অনেক জায়গাতেই ক্রেতার নিরাপত্তার কথা ভেবে পাতলা ফাইবারের ইউজ অ্যান্ড থ্রো প্লেট, গ্লাস, বাটি, চামচ, কাটা চামচ ইত্যাদি দেওয়া হচ্ছে। সেই বাড়তি খরচ নিয়ে নেওয়া হচ্ছে ক্রেতার থেকে। তবে একঘেয়ে বাড়ির খাবার থেকে বিরতির আনন্দে সেসব হাসিমুখেই মেনে নিচ্ছেন ভোজনবিলাশীরা।