সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যামামলার (RG Kar Hospital Case) তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে দুঁদে আইনজীবীরা। কেন প্রথমে আত্মহত্যা বলা হল, কেন এফআইআর দায়ের করতে এত দেরি, নির্যাতিতার নাম-ছবি কীভাবে প্রকাশ্যে এল? কেনই বা হাসপাতালে ডাক্তারদের জন্য ন্যূনতম আলাদা বিশ্রামকক্ষ থাকবে না? মঙ্গলবার শুনানির শুরুতেই এমন সব প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিবিআই-এর (CBI) কাছে স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ওইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি। ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা। তাঁদের মন্তব্য, ''এমন ঘটনায় আমরা বসে থাকতে পারি না, কিছু একটা করতে হবে।'' বিচারপতিদের বক্তব্যে স্পষ্ট, গোটা ঘটনাকে যেভাবে প্রশাসন তুলে ধরেছে, তাতে তাঁরা বিরক্ত।
এই মামলায় রাজ্যের তরফে আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করছেন বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বল (Kapil Sibbal)। তাঁকেই একাধিক প্রশ্ন করে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। প্রশ্ন ওঠে, রাত ৮.৩০এ মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে ছাড়া হল, ১১.৪৫এ এফআইআর কেন? তাতে সিব্বলের জবাব, নানা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গিয়ে দেরি হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয় আর জি করে হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়েও। তিনি কী করছিলেন? পদত্যাগের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই কীভাবে নতুন পদে বসতে পারেন? তাঁকে নিয়ে রাজ্যই বা কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? এসব জানতে চান বিচারপতিরা। সিব্বলের পালটা সওয়াল, সোশাল মিডিয়ায় ভুল খবর ছড়াচ্ছে, তাতে মানুষ বিভ্রান্ত। তাই সোশাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ন্ত্রণ করা হোক।
[আরও পড়ুন: আরও বিপাকে সন্দীপ ঘোষ! আর জি করের আর্থিক ‘বেনিয়মে’র তদন্তে SIT গড়ল রাজ্য]
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও কড়া ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতিরা। এদিনের শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সওয়াল করেন, ডিআইজি-কে অবিলম্বে অপসারিত করতে হবে। এছাড়া আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসকদের আন্দোলনে মাঝরাতে যে হামলা ঘটল, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কারা চালাল হামলা? তা নিয়ে তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশ। তার স্ট্যাটাস রিপোর্টও চেয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে তা দিতে হবে।