কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৫৫/৮ (মণীশ-৩৭, গ্র্যান্ডহোম-৩৬)
রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট: ১৫৮/৬ (ত্রিপাঠী-৯৩)
৪ উইকেটে জয়ী রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাহির খানের দিল্লিকে হারিয়েই প্লে অফ কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন গৌতম গম্ভীররা। কেকেআর-এর লাগাতার সাফল্যে ট্রফি জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করে দিয়েছিলেন ভক্তরা। কিন্তু হায়দরাবাদ ম্যাচেই তাল কাটল। রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেই ছন্দপতন হল নাইটদের। একা ওয়ার্নারই উড়িয়ে দিয়েছিলেন দুরন্ত ফর্মে থাকা কলকাতাকে। দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া গাড়িতে সজোরে ব্রেক কষলে ঠিক যেমন ধাক্কা লাগে, হায়দরাবাদের কাছে হারের পর কেকেআর শিবিরের ছবিটাও তেমনই ছিল। প্লে অফ নিশ্চিত করতে তাই ঘরের মাঠে পুণে বধ ছিল লক্ষ্য। কিন্তু ‘প্রায়’ শব্দটা এবারও ঘুচল না। চলতি আইপিএল-এ এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ফ্যাকাসে মুখে ইডেন ছাড়লেন নাইট সমর্থকরা।
[আগামী আইপিএল-এ আর দেখা যাবে না পুণে ও গুজরাটকে]
পুণের ডেরায় ঢুকে সুপারজায়ান্টদের বধ করেছিল গম্ভীর অ্যান্ড কোং। ‘ক্যাপ্টেন কুল’কে পরাস্ত করার তৃপ্তি নাইট নেতার চোখে-মুখে ফুটে উঠেছিল। নেপথ্যে পুণের বাঙালি মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কাও হার মেনেছিলেন কিং খানের স্পিরিটের কাছে। তাই ফিরতি ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। দাদার ডেরায় কি কামাল দেখাতে পারবেন ধোনি? হাজার হোক, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়কের বর্তমান ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাই সৌরভের কলকাতায় মাহি ‘মহারাজ’ হয়ে উঠতে পারেন কিনা, সে পরীক্ষাও চলছিল ভিতর ভিতর। খাতায়-কলমে যতই এটি কলকাতা বনাম পুণের ম্যাচ হোক, আসলে ধোনির সম্মানরক্ষার লড়াইটা ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি না পারলেও তাঁর দল সেই সম্মানরক্ষা করেছে। অন্যদিকে পুণের বাঙালি মালিকেরও বিশ্বাস ছিল, শহরটা যতটা সৌরভের, ততটা তাঁরও। তাই ইডেনে পুণের জন্য, ঘরের ছেলে মনোজের জন্যও গলা ফাটাবেন সমর্থকরা। তাঁর আশা খুব বৃথা যায়নি। গালে RPS রং মেখে, পুণের জার্সি গায়ে হাজির হয়েছিলেন অনেকেই। আর দিনের শেষে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েই সৌরভের শহরে নিজের বিজয় ঝাণ্ডা ওড়ালেন গোয়েঙ্কা।
একে তো টসে হার, তার উপর হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের কারণে দলে ছিলেন না রবিন উথাপ্পা। তাই শুরুতেই যেন পিছিয়ে পড়েছিল কেকেআর। ওয়াশিংটন সুন্দর, উনাদকাটের ঝোড়ো বোলিংয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল কলকাতার টপ-অর্ডার। উইকেটরক্ষক শেলডন জ্যাকশন ফিরলেন ১০ রানে। ৫৫ রানে চার উইকেট খুইয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে যায় কলকাতা। মণীশ পাণ্ডে ও গ্র্যান্ডহোম খানিকটা হাল ধরলেও সেই রান জয়ের জন্য মোটেই যথেষ্ট ছিল না। ৩০ রানে অপরাজিত থাকলেন উথাপ্পার পরিবর্তে দলে ফেরা সূর্যকুমার যাদব।
শেষ ৬ ম্যাচে পাঁচটি জয়ের আত্মবিশ্বাসকে হার মানাতে পারলেন না উমেশ যাদব, সুনীল নারিনরা। গত ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো বেন স্টোকসের উপরই বেশি ভরসা ছিল অধিনায়ক স্মিথের। কিন্তু এদিন বাজিমাত করলেন এক ভারতীয়। ৫২ বলে ৯৩ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলে কার্যত একাই দলকে জয়ের দোরগোড়ায় এনে দিলেন রাহুল ত্রিপাঠী। বাকি কিন্তু ২০র গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। ৫ রানে ধোনিকে প্যাভিলিয়নে ফেরান কুলদীপ নায়ার। তবে এদিন পুণের ফিল্ডিংয়ের প্রশংসা না করলেই নয়। অসাধারণ ফিল্ডিংয়ের জন্যই নাইটদের কম রানে বেঁধে ফেলা সম্ভব হয়েছিল। বাউন্ডারি বাঁচাতে গিয়ে মাথায় চোট পান নেতা স্মিথও। যদিও তা খুব গুরুতর ছিল না। ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট ঝুলিতে ভরে প্লে অফে পৌঁছনোর পথ আরও চওড়া করে ফেলল পুণে।
The post ঘরের মাঠে পুণের কাছে শোচনীয় হার নাইটদের appeared first on Sangbad Pratidin.