সঞ্জয় সেন: নতুন বছরের প্রথম ডার্বিতে মুখোমুখি দুই প্রধান। কলকাতা নয়, ভুবনেশ্বরে। সুপার কাপের গ্রুপ এ-র শীর্ষস্থান নির্ণয়কারী ম্যাচে। আশা করছি, দুটো টিমই তাদের গত দুম্যাচের পারফরম্যান্স ভুলে ডার্বি খেলতে নামবে।
আসলে এখনও পর্যন্ত সুপার কাপে (Kalinga Super Cup) মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দুটো টিমের পারফরম্যান্সই খুব সাধারণ লেগেছে। তাই বলতে পারব না কে এগিয়ে। অনেককেই দেখছি, ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে (East Bengal) এগিয়ে রাখছেন। বলা হচ্ছে, মোহনবাগানের (Mohun Bagan) সাত-সাত জন গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় ফুটবলার নেই। কিন্তু লোকে ভুলে যাচ্ছে, সুপার কাপে ছজন বিদেশি খেলানো যায়। আইএসএলে যা যায় না। তবে তাতে মোহনবাগানের কতটা কী লাভ হবে, জানি না। গ্লেন মার্টিন্স বা দীপক টাংরির মতো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার থাকলে টিমটার ভারসাম্য নিঃসন্দেহে থাকত। কিন্তু যারা নেই, তাদের নিয়ে ভেবেও বা লাভ কী?
[আরও পড়ুন: রামমন্দির ঘিরে নবরূপে অযোধ্যা, সিঙ্গুরের মতো জমি অধিগ্রহণ নীতি যোগী সরকারের]
কোচ বদল হয়েছে মোহনবাগানের। জুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferrando) বদলে এসেছেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। তবে আমি বলব, কোচ নয়। পদ পরিবর্তন হয়েছে। হাবাস আগে ছিলেন টিমের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। এখন কোচ। হাবাসের সুবিধে হল, মোহনবাগান প্লেয়ারদের সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রয়েছে তাঁর। প্লাস, ডার্বির অভিজ্ঞতা আছে। কোচ হিসাবে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েওছেন। সমস্যা একটাই। বর্তমান মোহনবাগান টিমের খেলার মান খুব খারাপ। বিশেষ করে বিদেশিদের। ফুটবলারদের কী ভাবে হাবাস তাতান, কী ভাবে তাদের ফর্মে ফিরতে সাহায্য করেন, দেখার।
একটা সুবিধে যে, খেলাটা ভুবনেশ্বরে। অত চাপ থাকবে না। তা ছাড়া হুগো বুমোস আর দিমিত্রি পেত্রাতোসের মতো দুজন প্লেয়ারকে আক্রমণভাগে পাবেন হাবাস। যারা যে কোনও মুহূর্তে খেলার রং বদলে দিতে পারে। তবে শুনছি, টেকনিক্যাল কারণে হাবাস আজ ডাগআউটে থাকবেন না। তিনি থাকবেন গ্যালারিতে। মোহনবাগান কোচ হিসেবে মাঠে থাকবেন ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। আর টেকনিক্যাল এরিয়ায় হাবাস না থাকায় কিছুটা হলেও সুবিধে হবে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal)। হয়তো হাফটাইমে হাবাস কিছু পরামর্শ দেবেন মিরান্ডাকে। খেলা শুরুর আগেও দেবেন। কিন্তু প্রতি মিনিটে টিমকে নির্দেশ হাবাস দিতে পারবেন না। ইস্টবেঙ্গল ওদের খেলার উন্নতি আবার হচ্ছে ধীরে-ধীরে। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের সঙ্গে টিমের পারস্পরিক বিশ্বাস তৈরি হয়ে গিয়েছে। কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat) অনেক জুনিয়র ফুটবলারকে দেখেশুনে নিতে পেরেছেন। খেলিয়ে-খেলিয়ে তাদের ম্যাচ রেডি করে ফেলতে পেরেছেন। আলাদা করে তিন জন লাল-হলুদ ফুটবলারের দিকে নজর থাকবে আমার। ১) হিজাজি মাহের। ২) শৌভিক চক্রবর্তী। ৩) ক্লেটন সিলভা। হিজাজি টিমের রক্ষণকে দারুণ সামলাচ্ছে। নেতৃত্ব দিচ্ছে। মাঝমাঠে শৌভিকের খেলায় পরিণতির ছাপ দেখতে পাচ্ছি। তবে ওকে কার্ড দেখা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ডার্বিতে কার্ড দেখলে প্লেয়ার মানসিক ভাবে চাপে পড়ে যায়। ক্লেটনও দারুণ। আক্রমণের পাশাপাশি রক্ষণকেও সাহায্য করছে।
[আরও পড়ুন: দুয়ারে সরকারেও ‘বঞ্চিত’, সরকারি পরিষেবা দিতে নয়া কর্মসূচি ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
ইস্টবেঙ্গলের দুর্বলতা তাদের দুই সাইডব্যাক। যার ফায়দা তোলার চেষ্টা করতে পারেন হাবাস। টিমকে নির্দেশ দিতে পারেন, বিহাইন্ড দ্য ডিফেন্সে ক্রস ফিল্ড বল ব্যবহার করতে। ম্যাচটা কুয়াদ্রাতের কাছে তাই পুরোপুরি ট্যাকটিক্যাল লড়াই। প্রতিআক্রমণে উনি বাজিমাত করলে, অবাক হব না। দেখা যাক, কী হয়। শুধু বলব, পূর্বাভাসে যাবেন না। এবার যেমন ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে বলা হচ্ছে। নতুন মরশুমের প্রথম ডার্বিতে কিন্তু মোহনবাগান এগিয়ে, বলা হচ্ছিল। রেজাল্ট মনে আছে তো? নন্দকুমারের গোলে সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের ডার্বি জয় নিশ্চয়ই এখনও কেউ ভোলেননি!