প্রণব সরকার, আগরতলা: লোকসভা ভোটের আগে ত্রিপুরার আদিবাসীদের আন্দোলন দমন করতে ঐতিহাসিক চুক্তি করে ফেলল কেন্দ্র। আদিবাসীদের প্রতিনিধি হিসাবে সেরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য প্রদ্যোত মাণিক্য দেববর্মার সঙ্গে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকারের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। যার ফলে আপাতত শান্ত হল ত্রিপুরার আদিবাসীদের বিক্ষোভ।
পৃথক তিপ্রাল্যান্ডের দাবিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই সরব ত্রিপুরার আদিবাসীরা। বিশেষ করে সেরাজ্যের রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা এই নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশ নিয়ে নিজেদের দাবি জোরাল করার চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। রাস্তায় নেমে আন্দলন করেছেন। শেষে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এমনকী অনশনে বসেও পড়েন। তড়িঘড়ি তাঁকে ফোন করে দিল্লি তলব করেন অমিত শাহ (Amit Shah)। আসলে লোকসভার আগে আদিবাসীদের বিক্ষোভ শান্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: যার জন্ম হয়নি তারও জব কার্ড! ১০০ দিনের কাজে ‘তোলাবাজ’ তৃণমূলকে তোপ মোদির]
প্রদ্যোৎ দিল্লি পৌছতেই শুরু হয় আলোচনা। শেষে শনিবার ঐতিহাসিক ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা, সাংসদ বিপ্লব দেব, মহারাজ প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকরা। শাহ এদিন দাবি করেছেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক চুক্তি। অতীতের ভুল সংশোধন করে এই চুক্তি করা হয়েছে। চুক্তিতে রয়েছে, ত্রিপুরার আদিবাসীদের ইতিহাস, জমির অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিচয়, সংস্কৃতি, ভাষা, ইত্যাদি সম্পর্কিত সকল সমস্যা সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমাধান করতে সবপক্ষ সম্মত হয়েছে।” কিন্তু ঠিক কীভাবে বা কোন উপায়ে আদিবাসীদের দাবি পূরণ করা হবে, সেটা চুক্তিতে উল্লেখ করা নেই।
[আরও পড়ুন: গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে দাউদাউ আগুন! গুরুতর জখম শাহজাহান-সহ ৪]
এই চুক্তির প্রেক্ষিতে একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য, সমস্ত স্টেকহোল্ডাররা স্বাক্ষরের দিন থেকে শুরু করে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন হওয়া পর্যন্ত যে কোনো ধরনের আন্দোলন, বিক্ষোভ করা থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা (Manik Saha) এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। সংসদ বিপ্লব কুমার দেব এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন।