সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবিলম্বে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। সোমবার এমনটাই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এমনকী একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ মে কারনানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং ৮ মে মেডিকেল বোর্ডকে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এছাড়া মেডিকেল বোর্ডকে সাহায্য করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপি-কে একটি বিশেষ দল গঠনের পরামর্শও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি ১৮ মে কারনানের বিরুদ্ধে মামলার পরবর্তী শুনানির দিনও ধার্য করা হয়েছে।
[পৈতৃক জমি মন্দিরে দান করে সম্প্রীতির নজির মুসলিম পরিবারের]
উল্টোদিকে কারনান জানিয়ে দেন, ‘কোনও রকম স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাব না। সাত জন দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারক মিলে আমার বিচার করছে। আমি দলিত বলেই আমার সঙ্গে এরকম করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপি যদি জোর করে আমার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসে, তাহলে আমি নিজেই তাঁর সাসপেনশনের নির্দেশ দিতে বাধ্য হব।’
[আলোচনাতেই মিটবে কাশ্মীর সমস্যা, আশা তুরস্কের প্রেসিডেন্টেরও]
এদিন সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল কারনানের। কিন্তু তিনি উপস্থিত হননি। এই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর-সহ সাত সদস্যের বেঞ্চ জানায়, ‘যে কেউ যা খুশি বলে পার পেয়ে যাবে, এমনটা হতে পারে না।’ এর আগে শুক্রবার নিউটাউনের রোসডেল টাওয়ারে বাড়িতে বসেই নিজের দায়ের করা একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ ৭ বিচারপতির উড়ানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন বিচারপতি কারনান। এয়ার কন্ট্রোল অথোরিটির উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করে একথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এদিন শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, কারনানের কোনও নির্দেশই কার্যকর হবে না। কোনও বিশেষ আদালত বা ট্রাইবুনালও এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পাশাপাশি জানানো হয়, কারনান যদি আদালতে নিজের বক্তব্য পেশ না করে, তাহলে ধরে নেওয়া হবে তাঁর কিছু বলার নেই।
[বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নিল শহরের ইকো পার্ক]
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদ্যস্যের এই বেঞ্চই বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন৷ দেশের প্রায় ২০ জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন কারনান৷ এমনকী বিচারব্যবস্থা ও সরকারের কাজের সমালোচনা করে মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও আক্রমণাত্মক ভাষায় চিঠি লিখেছিলেন বিচারপতি কারনান৷ সেই চিঠি তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে পাঠিয়েছিলেন৷ এরপরই সর্বসম্মতিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছিল শীর্ষ আদালত৷ এই মামলার শুনানিতে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিচারপতি কারনানকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি হননি। আর তারপরই কারনানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।