shono
Advertisement

স্কুলেই ছাত্রীর ‘শ্লীলতাহানি’, বাগনানে প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মার গ্রামবাসীদের

পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
Posted: 09:34 PM Feb 21, 2024Updated: 09:34 PM Feb 21, 2024

মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাগনানের খানপুর এলাকার এক উচ্চমাধ্যমিক স্কুল। গ্রামবাসীদের হাতে প্রহৃত হলেন প্রধান শিক্ষক। চলে পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো। অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। গ্রামবাসীরা বুধবার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। লোক দেখে সে কামরার ভাঙা জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়। ফলে খেপে যায় গ্রামবাসীরা। তারা তখন শিক্ষকের উপর চড়াও হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisement

অভিযোগ, পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয় এবং কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয়। পরে পুলিশ প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। যদিও পুলিশ কর্তারা লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হাওড়া গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া বলেন আপাতত প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত সোমবার। বিকেল পাঁচটা নাগাদ সপ্তম শ্রেণীর কিছু ছাত্রী ডায়েরি এবং খাতা নিতে আসে প্রধান শিক্ষকের কাছে। সেগুলো দেওয়ার জন্য স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ওই কর্মী লাইব্রেরির পাশের স্টোর রুমে নিয়ে আসে ছাত্রীদের। অভিযোগ সেখানে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে সে। বিষয়টা এক শিক্ষিকাকে ছাত্রীরা জানায়। শিক্ষিকা বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানান। সেদিন আর বিশেষ কিছু হয়নি। পরে কিন্তু বিষয়টা এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। মঙ্গলবার দিন স্কুল খুললেই একদল অভিভাবক স্কুলে আসে। তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে ওই অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান এবং তাকে এই স্কুল থেকে স্থানান্তর করার দাবি জানান। প্রধান শিক্ষক তাদের জানান এই ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং তা শিক্ষাদপ্তরের কর্তাদের জানানো হবে।

[আরও পড়ুন: ‘ডাকলে আবার আসব’, প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা পর ইডি দপ্তর থেকে বেরিয়ে বললেন দেব]

ফের বুধবার দিন সকালে এলাকার একদল লোক প্রধান শিক্ষককে কাছে আসেন। তাদেরকেও প্রধান শিক্ষক একই কথা জানান। এর পরেই আরও এক দল এলাকার বাসিন্দা প্রধান শিক্ষকের কাছে আসেন। তারা অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। সেই সময় প্রধান শিক্ষকের কাছেই ছিলেন অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী। এত লোক দেখে সে এক ভাঙা জানালা দিয়ে পালিয়ে যান। আর এতেই ক্ষেপে যান এলাকার বাসিন্দারা। প্রধান শিক্ষক বলেন গ্রামবাসীরা মনে করেছে আমি ওই অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে পালাতে সাহায্য করেছি। তারপরেই তারা আমার উপর চড়াও হন। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ আগেও উঠেছিল।

স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় তাকে সাবধান করে। তারপরে ফের এই ধরনের ঘটনা ঘটাল ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বাগনান থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় পুলিশ শান্ত করার চেষ্টা করেন কিন্তু শেষে বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। এমনকি পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়। পুলিশ পরে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে।

[আরও পড়ুন: ইট, ছুরি ও রডের আঘাতে খুন কোন্নগরের শিশু! ‘নিজের সন্তানকে কেউ মারতে পারে?’, প্রশ্ন অভিযুক্ত মায়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement