সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। পালটা চরম নিপীড়ন চালাচ্ছে সেনাশাসকরা। নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪০ জন গণতন্ত্রকামীর। এহেন পরিস্থিতিতে নিরীহ মানুষের উপর গুলি চালিয়ে বিবেক দংশনে ভুগছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি মায়ানমারের নাগরিক। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: চিনের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে আমেরিকা, লালফৌজকে রুখতে বৈঠকে বসছে QUAD]
সূত্রের খবর, মার্চের ৩ তারিখ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামের চামফাই ও সেরচিপ জেলায় অন্তত ৫০ জন মায়ানমারের নাগরিক আশ্রয় নিয়েছেন। সেরচিপ জেলার ডেপুটি কমিশনার কুমার অভিষেক জানিয়েছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে পড়শি দেশটির পুলিশকর্মীরা রয়েছেন কি না, তা এখনই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। করোনা টেস্ট করার পর তাঁদের আপাতত একটি শিবিরে রাখা হয়েছে। সেখানেই তাঁদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ এলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান তিনি। চামপাই জেলার ডেপুটি কমিশনার মারিয়া সিটি জুয়ালি জানিয়েছেন, তাঁর জেলাতেই মায়ানমার থেকে কয়েকজন শরণার্থী প্রবেশ করেছেন। বলে রাখা ভাল, বার্মিজ শরণার্থীদের অধিকাংশ ‘চিন’ উপজাতির। ভারতের মিজোদের সঙ্গে এদের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। গতমাসে বার্মিজ শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার দাবি জানিয়ে সরকারের কাছে আরজি জানিয়েছিল মিজো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছেন। কিন্তু আন সাং সু কি-পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। সেই উদ্দেশে নির্বিচারে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তারা। সেনা ও পুলিশের গুলিতে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪০ জনের। এদিকে, সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন এনএলডি নেত্রী আং সাং সু কি-র আইনজীবী হিন মাউং জ। তাঁর আশঙ্কা, সু কি-কে নতুন ভাবে আইনি জালে জড়াতে পারে সেনা। সম্প্রতি সু কি-র বিরুদ্ধে সেনা যে নতুন দুই অভিযোগ এনেছে, সেই মামলায় চলতি সপ্তাহেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন মায়ানমারের গণতান্ত্রিক এই নেত্রী।