সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহা শিবরাত্রি (Shivratri 2021)। হিন্দুধর্মের আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনায় মাতবেন ভক্তরা। শিবলিঙ্গের মাথায় ঢালা হবে জল। শোনা যায়, এই দিনেই শিব ও পার্বতী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তাই ভক্তদের বিশ্বাস, এই পূণ্যতিথি পালন করলে সমস্ত পাপ থেকে নিষ্কৃতি মেলে। সংসারে শান্তি ফেরে এবং মোক্ষলাভ হয়। আবার এও শোনা যায় যে এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন।
ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয় মহা শিবরাত্রি। বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩৯ মিনিট থেকে এই তিথি শুরু হচ্ছে। শেষ হচ্ছে ১২ মার্চ দুপুর ৩.০২ মিনিটে।
শাস্ত্র মতে, শিবরাত্রির দিন সকাল থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত উপোস করেই পুজো করতে হয়। তবে যিনি উপবাস করছেন, তিনি দুধ-ফল ইত্যাদি খেতে পারেন। কিন্তু সেসব খেতে হবে সূর্যাস্তের আগে। যাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে এই ব্রত পালন করেন, তাঁরা সারারাত জেগে থাকেন। চোখের পাতা এক করেন না। বরং রাত জেগে ভক্তিগীতি গেয়ে থাকেন। পরের দিন পুজোর প্রসাদ খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। মহা শিবরাত্রিতে চার প্রহর ধরে মহাদেবের পুজো হয়। প্রথম প্রহরে জল দিয়ে, দ্বিতীয় প্রহরে দই দিয়ে, তৃতীয় প্রহরে ঘি এবং শেষ প্রহরে মধু দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করতে হয়।
[আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ৩১ বছর পর কাশ্মীরে খুলল মন্দির]
শিবের পুজোয় কী কী অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত? অপরাজিতা, ধুতরা, আকন্দ ফুল এবং বেল পাতা। পুজো শেষ হওয়ার পর মহাদেবের ১০৮টি নাম জপ করতে হয়। তবে বর্তমানে অনেকেই ব্যস্ততার জন্য এবং স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এভাবে ব্রত পালন করতে পারেন না। প্রায় একটা গোটা দিন উপবাস করা এবং সারারাত জেগে থাকা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করলেও হয়। স্নান করে শুদ্ধ বসনে সন্ধ্যাবেলা শিবলিঙ্গে জল ও বেল পাতা নিবেদন করে পুজো করলেই ভোলানাথ তুষ্ট হন। তারপর পুজোর প্রসাদ গ্রহণ করলেই ব্রত পালন করা সম্পন্ন হয়। রাত না জাগলেও কোনও দোষ হয় না। পুরোটাই মনের ভক্তি, বিশ্বাস ও নিষ্ঠার বিষয়।