সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংঘাত আবহেও লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কিন্তু মানবাধিকারের প্রসঙ্গ তুলে শুভেচ্ছাবার্তায় কার্যত 'খোঁচা' দিয়েছিলেন তিনি। এবার ধন্যবাদ জানিয়ে ট্রুডোকে পালটা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একে অপরের উদ্বেগের জায়গাগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখেই আগামিদিনে কানাডার সঙ্গে কাজ করবে ভারত। বার্তায় জানালেন নমো।
খলিস্তানি ইস্যুতে বিদ্ধ হয়ে আছে ভারত-কানাডা সম্পর্ক। এর মাঝেই সেদেশের নির্বাচনে নাক গলানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সংঘাত আরও বেড়েছে। কিন্তু এই টালমাটাল পরিস্থিতিতেও গত ৬ জুন, বৃহস্পতিবার মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ট্রুডো লেখেন, 'নির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনেক অভিনন্দন।' আগামিদিনে একসঙ্গে কাজ করতে চাইলেও দিল্লিকে কিছুটা বিঁধে ট্রুডো বলেন, 'মানবাধিকার, বিবিধতা, আইনের শাসন বজায় রেখেই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হবে।'
সোমবার এক্স হ্যান্ডেলে ট্রুডোর শুভেচ্ছাবার্তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মোদি লেখেন,'অভিনন্দন জানানোর জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আগামিদিনে কানাডার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক ভারত। আমাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধা বজায় রেখে উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।' ট্রুডোর পাশাপাশি বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তাঁদের সকলকেই সঙ্গে সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নমো। কিন্তু সেখানে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তার উত্তর চারদিন পর দিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের মামলায় এখনও পর্যন্ত কানাডায় গ্রেপ্তার হয়েছে চার ভারতীয় নাগরিক। যা নিয়ে শিখদের একটি অনুষ্ঠানে ট্রুডো বলেছিলেন, “কানাডায় আইনের শাসন রয়েছে। স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ রয়েছে। দেশের প্রত্যেক নাগরিককে রক্ষা করাই এই ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য। পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে।” বিশ্লেষকদের মতে, নিজের দেশের আইনের শাসন মনে করিয়ে দিয়েই মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। যার পালটা দিয়েছেন নমোও। একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে যে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা আগে দরকার সেটাই পরিষ্কার দিয়েছেন তিনি।
নিজ্জর খুনের পর থেকেই ফাটল চওড়া হয়েছে ভারত-কানাডা সম্পর্কের। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। নিজ্জর খুনে অভিযোগ তুলেছিলেন দিল্লির দিকে। তার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশ থেকেই অপর দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়। এর পর ভারত থেকে ৪০ জন কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে নেয় কানাডা। ট্রুডোকে সরকারকে পালটা দিয়ে ভারত বারবার অভিযোগ করে এসেছে কানাডা সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি হয়ে উঠেছে। কানাডার প্রশয়েই খলিস্তানিরা নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করছে। ভারতবিরোধী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। ফলে আরেকবার মোদি সরকার ক্ষমতায় আসায় আগামিদিনে দুদেশের সম্পর্ক কোনদিকে এগবে সেদিকেই নজর রয়েছে কূটনৈতিক মহলের।