সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাজার সতর্কতামূলক পদক্ষেপ সত্ত্বেও ঠেকানো যাচ্ছে না শিশুমৃত্যু। প্রায় প্রতিদিনই লেগে রয়েছে প্রাণহানি। ফের রাজ্যে প্রাণ গেল ৬ শিশুর। ঘটনাস্থল বি সি রায় শিশু হাসপাতাল।
মৃতদের মধ্যে একজন উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখার বাসিন্দা। চার মাস বয়সি ওই শিশুর মাসখানেক আগে পক্স হয়েছিল। গত মঙ্গলবার জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়। শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার ভোর চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় তার। আতিফা খাতুন নামে ১ বছর ৭ মাস বয়সি আরও একটি শিশুরও মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয় সে। সপ্তাহখানেক ধরে চলে যমে-মানুষে টানাটানি। রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ মৃত্যু হয় খুদের। এছাড়া আরও চারটি শিশুর প্রাণ গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ৫-১১ মার্চের Horoscope: কেমন কাটবে দোল? রাশিফল মিলিয়ে জেনে নিন কী রয়েছে আপনার ভাগ্যে]
শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয় দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে জ্বর, সর্দি-কাশির সংক্রমণ। যার নেপথ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। এরজন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করেছেন ইনফ্লুয়েঞ্জার উপ প্রজাতি এইচ ৩ এন ২ ভাইরাসকে। আইসিএমআর-এর তরফে শনিবারই সমাজমাধ্যমে জনগণকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এই ধরনের জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ কমাতে মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া মারাত্মক বিপজ্জনক। কেউ কেউ আবার আজিথ্রোমাইসিন বা আইভারমেকটিন জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন। এমন নির্বিচারে ওষুধ খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। আইসিএমআর-এর পরামর্শদাতা ডা. সমীরণ পন্ডার কথায়, নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে ভবিষ্যতে এই গোত্রের কোনও ওষুধ কাজ করবে না। শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে।
অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ খুব গুরুতর হয় না। কেবল শ্বাসযন্ত্রের কিছুটা ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু, লক্ষণগুলির তীব্রতা বিভিন্ন বয়সের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে, অন্তত এমনটাই বলছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের ডা. জয়দেব রায়ের কথায়, “তাপমাত্রা অনেকটা বাড়ছে। জ্বর শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমছে। খুব শ্বাসকষ্ট হলে বা জ্বরের ঘোরে খিঁচুনি হলে অথবা নেতিয়ে পড়লে অথবা বাচ্চা স্তন্যপান করতে না পারলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বাড়িতে অক্সিজেন বা নেবুলাইজার দেওয়া যাবে না। ফল হিতে বিপরীত হতে পারে।”
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সানন্দা মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুরা দুই সপ্তাহের মধ্যে ভাইরাস থেকে সেরে উঠতে পারে। যদি বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট খুব বেশি হয়, তবে বিশেষজ্ঞকে দেখানো দরকার।” তাঁর কথায়, “গুরুতর অসুস্থ বাচ্চা ভরতির পর হাসপাতালে থাকাকালীন, শুধুমাত্র উচ্চ প্রবাহযুক্ত অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার কর হয় এবং বিশেষ প্রয়োজনে নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট কমাতে বুকের ফিজিওথেরাপি করা হয়। কিছু কিছু শিশুদের ক্ষেত্রে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হয়। তাদের পিকু (পেডিয়াট্রিক কেয়ার ইউনিট ) রেখে চিকিৎসা করতে হয়।”