অর্ণব আইচ: বেহালার (Behala Murder Case) পর্ণশ্রীতে মা ও ছেলে খুনের ঘটনায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। সোমবার রাত সওয়া ন’টা নাগাদ স্ত্রী সুস্মিতা মণ্ডল (৪৫) ও তমোজিৎ মণ্ডলের (১৩) গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। জোড়া এই খুনে সুস্মিতাদেবীর স্বামী তপন মণ্ডল যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, পেশায় ব্যাংককর্মী তপন মণ্ডলের বয়ানে একাধিক অসংগতি পাওয়া গিয়েছে।
পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকার গোপাল মিশ্র রোডের বহুতল ফ্ল্যাটে সুস্মিতা মণ্ডল ও তমোজিতের দেহ উদ্ধার হয়। শোওয়ার ঘরে সুস্মিতাদেবীর দেহ পড়ে ছিল। তমোজিতের দেহ ছিল তার পাশের ঘরে। তার পরনে ছিল স্কুলের পোশাক। মনে করা হচ্ছে, খুন হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারচুয়াল ক্লাস করছিল কিশোর। তমোজিতের স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, সওয়া তিনটে থেকে চারটের শেষ ক্লাসটি সে করেনি। তাহলে কি সেই সময়ের মধ্যেই তাকে খুন করা হয়েছে? এই প্রশ্ন উঠছে।
[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: ‘সরকার পদক্ষেপ করছে, নিশ্চিন্তে পুজো করুন’, কমিটিগুলিকে অভয়বাণী মুখ্যমন্ত্রীর]
এদিকে ঘটনার কিছুক্ষণ পরই তপন মণ্ডলকে আটক করা হয়েছে। লালবাজারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সুস্মিতাদেবীর আত্মীয় ও প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, একটি সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াতেন সুস্মিতা মণ্ডল। তবে গতবারের লকডাউনে সেই চাকরি ছেড়ে দেন। শোনা যাচ্ছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়াও হত। সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল কিনা, সেই সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
তপন মণ্ডল জানিয়েছিলেন রাত ন’টার সময় তিনি যখন বাড়ি ফিরেছিলেন, তখন কলাপসিবল গেট খোলা ছিল। ভেজানো ছিল দরজা। কিন্তু মণ্ডল পরিবারের গৃহশিক্ষক জানান, বিকেল পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি গিয়েছিলেন, তখন ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। বেল বাজালেও কেউ দরজা খোলেনি। মনে করা হচ্ছে, সওয়া তিনটে থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যেই গোটা ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নানা নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক দল। তাঁদের অনুমান, খুনের পর বাথরুমে আততায়ী স্নান করেছিল। সেখান থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, তপন মণ্ডলের নখ ও আংটিতে রহস্যজনক কিছু দাগ পাওয়া গিয়েছে। সেই দাগ কীসের, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।