শুভঙ্কর বসু: বেশ কয়েকদিন ধরেই কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) কার্যবিধি নিয়ে আদালতের অন্দরেই ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছিল। অবধারিতভাবে শেষে তা বিস্ফোরণের আকার নিল। হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবীদের একাংশ। মঙ্গলবার থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাসে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, অরুণাভ ঘোষের মত বিশিষ্ট আইনজীবীরা। যদিও হাই কোর্টে আইনজীবীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বার অ্যাসোসিয়েশনের এ বিষয়ে এখনও নীরব।
ঘটনার সূত্রপাত নারদ মামলাকে কেন্দ্র করে। রাজ্যের চার হেভিওয়েট নেতামন্ত্রী নিম্ন আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর যেভাবে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া কলকাতা হাই কোর্টে চলেছে তা নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন বিচারপতি অরিন্দম সিনহা। সম্প্রতি বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর এজলাস থেকে একটি মামলা অন্য বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। বিচারপতি ভট্টাচার্য মামলার রায়ে হাই কোর্টের কার্যবিধি নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি বিচারপতি ভট্টাচার্যর সেই রায়ের প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট প্রশাসনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে ‘স্পেশাল লিভ পিটিশন’(এসএলপি) দায়ের করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল।
[আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতির CBI তদন্তের দাবিতে মামলা, কী জানাল কলকাতা হাই কোর্ট?]
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এদিন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, অরুণাভ ঘোষের মত আইনজীবীরা বৈঠকে মিলিত হন। সেখানেই তাঁরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এদিন দুপুরের পর থেকে আর শুনানিতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের অভিযোগ, যে ভাবে সিঙ্গল বেঞ্চের মামলা ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের রায় হাই কোর্ট প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে, তা নজিরবিহীন। এদিন দুপুর ২টোর পর থেকে পর পর চারটি মামলায় বারের কোনও আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাসে একটি মামলার শুনানি চলাকালীন আইনজীবীদের একাংশ সেখানে হাজির হয়ে জানিয়ে দেন, কোনও মামলার শুনানিতে অংশ নেবেন না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এজলাসে বেশ কিছুক্ষণ হাজির থাকলেও কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দুই বিচারপতি বেঞ্চ ছেড়ে চলে যান। যদিও বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও অবস্থান এদিন ঘোষণা করা হয়নি।