shono
Advertisement

রাতের শহরে সাইকেল চালাচ্ছেন খোদ এসপি! যানজট কমাতে অন্য ভূমিকায় পুলিশকর্তা

বারাসতের যানজট কমাতে অভিনব উদ্যোগ পুলিশ সুপারের।
Posted: 10:30 AM Aug 26, 2022Updated: 10:35 AM Aug 26, 2022

অর্ণব দাস, বারাসত: আরব‌্য রজনীর গল্পে রাতের অন্ধকারে নিতান্ত ছাপোষা বেশে রাজমহল থেকে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিজের চোখে প্রত‌্যক্ষ করতেন বাগদাদের সুলতান হারুন-অল-রশিদ। আবার সম্রাট আকবর বীরবলকে সঙ্গে নিয়ে সাধারণ বেশভূষায় গাঁ-গঞ্জ-বাজারে ঘুরে ঘুরে নিজের চোখে দেখতেন প্রজার অবস্থা। পরখ করে নিতেন ‘তোষামোদকারী’ পার্ষদদের বর্ণনার সঙ্গে বাস্তবের ফারাকটা। সে দিন গিয়েছে, সে রাজপাটও এখন বর্ণময় অতীত। কিন্তু, কতকটা পুরনো দিনের রাজা-রাজড়াদের কায়দাতেই খাকি উর্দি ঝেড়ে ফেলে বারাসত (Barasat) শহরের তীব্র যানজট খতিয়ে দেখতে প্রায়দিনই সাদা পোশাকে রাস্তায় বেরচ্ছেন খোদ বারাসত পুলিশ জেলার সুপার  রাজনারায়ণ মুখোপাধ‌্যায়। সঙ্গী দু’চাকার সাইকেল (Bicycle)। প্যাডেলে চাপ দিয়েই গোটা শহর ঘুরছেন তিনি। খোদ পুলিশ সুপারের এমন ভূমিকায় ধন্য ধন্য করছেন সকলে।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas)জেলা সদর বারাসতে যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। তার নিরসনে পুলিশ সুপার নিজে পথে নামায় সমস্যা কিছুটা লাঘব হয়েছে। এখন অনেকটাই কমেছে যানজট। আগামী দিনে তা নির্মূল হয়ে যাবে বলেই আশ্বাস এসপি (SP)রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। বারাসত শহরের ভিতর দিয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গিয়েছে। একটি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক (NH34), যেটি বারাসত ডাকবাংলো মোড় থেকে কলোনি মোড় হয়ে কৃষ্ণনগরের দিকে যাচ্ছে। আর যশোর রোড গিয়েছে ডাকবাংলো মোড় থেকে বনগাঁর দিকে। ব্যস্ততম এই দুটি রাস্তায় যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে বিস্তর অভিযোগও ছিল শহরবাসীর। কিন্তু কিছুতেই সমস্যার সমাধান মিলছিল না।

[আরও পড়ুন: ময়দা-চিনির মূল‌্যবৃদ্ধির ধাক্কা, এবার দাম বাড়ছে পাউরুটি, কেক, চানাচুরের]

সমাধান খুঁজতে সাইকেল চালিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা গেল খোদ পুলিশ সুপারকে। প্রায় দিনই তিনি সন্ধের পর কিংবা রাতে সাইকেল চালিয়ে যানজটের খুঁটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখেন। জানা গিয়েছে, রাস্তার ধারে পার্কিংয়ের কারণে বারাসতে বড় অংশের যানজটের তৈরি হয়। এছাড়াও রাতের দিকে ভারী গাড়ির সংখ্যা বাড়ার কারণেও যানজট বাড়ে। এই দুটি বিষয় উপলব্ধি করতে পেরে পুলিশ সুপার সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হন। পাশাপাশি ট্রাফিকের সবকটি সিসিটিভি ক্যামেরাও (CCTV Cameras) সারানো হয়। এছাড়াও আগামীতে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে যানজটের সমস্যাও আরও সমাধান করার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাতের বারাসতে সাইকেল সওয়ারি পুলিশ সুপার।

এহেন ভূমিকায় বিপুল প্রশংসিত হয়ে পুলিশ সুপার নিজে কী বলছেন? তাঁর এহেন অজ্ঞাত-সফর ঘিরে তুমুল চর্চা হলেও বিষয়টিকে সেভাবে দেখতে নারাজ তিনি। বললেন, ‘‘যশোর রোডের ধারে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে পরপর গাড়ি পার্কিং করা হত। এই কারণে কলকাতা থেকে বারাসতে ঢোকার মুখেই যানজট তৈরি হত। এই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। ট্রাফিক কন্ট্রোলের সবকটি সিসিটিভি সারানো হয়েছে। রাতে ভারী গাড়ির কারণেও যানজট তৈরি হত। এই সমস্যা মেটাতে সিনিয়র অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফলেও যানজট কিছুটা কমেছে। আগামীতে প্রতিটি ট্রাফিক কিয়স্কে গুগল ম্যাপ এবং সিসিটিভি ক্যামেরার লাইভ ফিড লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এটা করতে পারলে যানজট আরও কমবে।’’

[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য: হাই কোর্টে ধাক্কা, রোদ্দুর রায়ের আবেদন খারিজ বিচারপতির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার