অভীক মজুমদার: এবছর জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পাচ্ছেন কবি শঙ্খ ঘোষ- এই বাক্য গঠনেই রোমাঞ্চ হচ্ছে৷ কেননা অনেক বছর পর জ্ঞানপীঠ পাচ্ছেন বাংলার অগ্রগণ্য কোনও লেখক৷ দ্বিতীয়ত ব্যক্তিগত অনুভূতিও ভিড় করছে, কেননা তিনি আমার মাস্টারমশাই৷ শুধু মাস্টারমশাই বললে কম বলা হয়, দীর্ঘদিন তাঁর সান্নিধ্য পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার৷ আমার লেখালেখি, চিন্তা-চেতনায় তাঁর বড় একটা অবদান আছে৷
বাংলার লেখক হিসেবে শঙ্ঘ ঘোষ অপ্রতিদ্বন্দ্বী, অতুলনীয়৷ রবীন্দ্রনাথ এবং বুদ্ধদেব বসুর পর অন্য কোনও লেখকের কথা মনে করতে পারি না যিনি এত বিচিত্র পথে ও বিষয়ে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন৷ কবি হিসেবে তিনি বাইরের দিকে মুখ করা আর ভিতর দিকে মুখ করা কবিতার সম্মেলন ঘটিয়েছেন৷ এই কাজ বাংলায় খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়৷ তাঁর কাব্যে একধরনের গভীর জীবনদর্শন থাকে যা আন্তর্জাতিক মানের৷ পাঠক হিসেবে মনে হয় অত্যন্ত তীব্র অস্তিত্ববাদী অনুভূতিতে তাঁর কবিতা ভাস্বর৷ সেই অস্তিত্ববাদ এক ধরনের সার্ত্রে কথিত মানবতাবাদেরই সম্প্রসারণ৷ সে জন্যই তাঁর কবিতা বিভিন্ন সময়ে নানা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সংকটের ধারাভাষ্য হয়ে ওঠে৷
রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তিনি অবিস্মরণীয়৷ প্রবন্ধের নানা আঙ্গিক চর্চাও তাঁর কাছ থেকে আমরা শিখেছি৷ ছোটদের জন্য, কিশোরদের জন্য তাঁর লেখাতে অন্তর্দৃষ্টি আর সমাজদৃষ্টির অকল্পনীয় সহজিয়া মিলন লক্ষ্য করি৷ পাশাপাশি ছাত্র হিসেবে বলতেই হয়, তাঁর মতো শিক্ষক, মানুষ বিরল৷
তাঁকে প্রণাম জানাই৷
The post পা ছুঁয়ে যে প্রণাম করি সে কি কেবল দিনযাপনের নিশান? appeared first on Sangbad Pratidin.