সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খেলার জগতে ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত কিংবদন্তি হকি তারকা কেশব দত্ত (Keshav Datt)। মঙ্গলবার রাত পৌনে একটা নাগাদ জীবনাবসান হয় দু’বারের অলিম্পিকে সোনাজয়ী দলের কিংবদন্তির।
বাইপাসের একটি আবাসনে থাকতেন কেশব দত্ত। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থও ছিলেন ৯৫ বছরের কিংবদন্তি। তাঁর প্রয়াণে টুইটারে শোকপ্রকাশ করেচেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। লিখেছেন, “কিংবদন্তিকে হারাল হকি বিশ্ব। কেশব দত্তর প্রয়াণে আমি মর্মাহত। ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ অলিম্পিকে সোনার পদকজয়ী দলের সদস্য তিনি। বাংলা তথা দেশের চ্যাম্পিয়ন। তাঁর পরিবার ও পরিজনদের সহানুভূতি জানাই।”
[আরও পড়ুন: ‘হাবাস স্যারের ফুটবল দর্শনকে সম্মান করি’, ফের সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপিয়ে বললেন আশুতোষ]
১৯২৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের লাহোরে জন্মেছিলেন কেশব দত্ত। শুধু হকি নয়, ছোট থেকে ব্যাডমিন্টন-সহ নানা খেলায় আগ্রহ ছিল তাঁর। তবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এসেছিল হকির হাত ধরেই। কেডি সিং, ধ্যানচাঁদের মতো প্রবাদপ্রতিম হকি তারকাদের তত্ত্বাবধানে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। পাঞ্জাব, বোম্বে এবং কলকাতার হয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে ধ্যানচাঁদের নেতৃত্বে পূর্ব আফ্রিকাতেও খেলতে গিয়েছিলেন। দেশভাগের পর ভারতে এসে ১৯৪৮ সালে অংশ নেন লন্ডন অলিম্পিকে (Olympics 1948)। ইতিহাস গড়ে সোনা জেতে সেই দল। পরের অলিম্পিকেও হাফব্যাক হিসেবে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেন। রচিত হয় সোনার ইতিহাস।
১৯৫০ সালে কলকাতা থেকে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন কেশব দত্ত। তবে কলকাতার সঙ্গে তৈরি হয়েছিল ভালবাসার সম্পর্ক। ক্যালকাটা পোর্ট কমিশনার্সে খেলার সময় তাঁর পারফরম্যান্স চোখে পড়ে মোহনবাগানের (Mohun Bagan) তৎকালীন হকি সচিব জহর গঙ্গোপাধ্যায়ের। যাঁর অনুরোধে ১৯৫১ সালে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন কেশব দত্ত। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ আবার ১৯৫৭-৫৮-তে মোহনবাগান হকি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই একই বছর বিটন কাপ ও ক্যালকাটা হকি লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নজির গড়েছিল গঙ্গাপারের ক্লাব।
সেই কিংবদন্তিকে পরবর্তীতে (২০১৯ সাল) মোহনবাগান রত্নে সম্মানিত করেছিল ক্লাব। ইস্টবেঙ্গলও ভারত গৌরব সম্মানে ভূষিত করেছিল তাঁকে। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হকির দুনিয়া।