সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সাপে-নেউলে সম্পর্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে। এমনকি, ইরানের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করারও অভিযোগ উঠেছিল মার্কিন ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ দু’মাস ধরে ইরানে হিজাব বিরোধী যে আন্দোলন চলছে, সেখানেও মার্কিন উসকানি রয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। এহেন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) মঞ্চে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশ। ১-০ ফলে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় ইরান (Iran)। তবে এত শত্রুতার মাঝেও সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছে দুই দেশের ফুটবলারদের একটি ভিডিও।
বিশ্বকাপে এই দুই দলের ম্যাচের ঠিক আগেই বিস্ফোরক অভিযোগ আনে ইরানের ফুটবল ফেডারেশন। তাদের তরফে বলা হয়, ইরানের পতাকায় ইসলামিক রিপাবলিকের চিহ্ন হিসাবে আল্লার নাম থাকে। কিন্তু মার্কিন (USA) ফুটবল ফেডারেশনের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ইরানের পতাকা থেকে সেই চিহ্ন মুছে ফেলা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সাম্প্রতিক হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন করার জন্যই এই পদক্ষেপ করেছে মার্কিন ফেডারেশন। শাস্তিস্বরূপ আমেরিকাকে দশ ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করার দাবি জানায় ইরান।
[আরও পড়ুন: ব্রাজিলের ‘হাসপাতালে’ আশার প্রদীপ নেইমার, ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে দলে দশ বদল তিতের]
ম্যাচের ঠিক আগেই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে আমেরিকাকে পালটা দেন ইরানের ফুটবল দলের কোচ কার্লোস কুইরোজ। তিনি বলেন, “মানবাধিকার রক্ষার বিষয়গুলি আমরা সবসময় সমর্থন করেছি। কিন্তু সেক্ষেত্রে কেবলমাত্র একটি দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষ্য নিয়ে চর্চা করব, অন্য দেশগুলির কথা মনে রাখব না, এমনটা হতে পারে না। স্কুলে পড়াশোনা করতে বন্দুকবাজের হামলায় খুন হচ্ছে ছোট্ট শিশুরা, এটাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ।” নাম না করেই আমেরিকাকে কটাক্ষ করেন ইরানের কোচ। চলতি বছরের মে মাসেই টেক্সাসের এক প্রাথমিক স্কুলে বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ১৯ জন শিশুর। সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গই টেনে আনেন কুইরোজ।
ম্যাচের আগেই জানা যায়, সরকারের হাতে বন্দি রয়েছেন ইরানি ফুটবলারদের পরিবার। দেশে ফিরে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে ফুটবলাদেরও। প্রচণ্ড চাপের মধ্যেই এই ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন ইরানের ফুটবলাররা। কিন্তু আমেরিকার কাছে হেরে তাঁদের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়। ম্যাচের পরে দুই দলের সৌজন্য বিনিময়ের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ইরানের রামিজ রেজিয়ান। তাঁকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসেন মার্কিন ফুটবলার অ্যান্টনি রবিনসন। শক্ত করে রামিজকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। অ্যান্টনির কাঁধে মাথা রেখেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন রামিজ। এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। নেটিজেনরাও দুই খেলোয়াড়ের আচরণের প্রশংসা করেছেন।