অর্ণব আইচ: তদন্ত কবে শেষ হবে? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আলিপুরের পর এবার ব্যাঙ্কশাল আদালতেও প্রশ্নের মুখে সিবিআই। এবারও সিবিআইয়ের উত্তর, ‘‘তদন্ত চলছে। এখনও চলবে।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারও ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক সংস্থার দক্ষিণ কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের অফিসে সিবিআই তল্লাশি চালায়। সংস্থার অফিস থেকে ওএমআর শিট সংক্রান্ত কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। আগামী বেশ কিছুদিন ধরেই এই তল্লাশি চলার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলার চার্জ গঠন কবে হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারক। এমনকী, এই মামলার মূল অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে বলেন, ‘‘দেড় বছর ধরে জেলে রয়েছি। এবার মামলার ট্রায়াল শুরুর আবেদন জানাই। চার্জ গঠনের তারিখও ধার্য করার আবেদন জানাচ্ছি।’’ সম্প্রতি প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলা আলিপুরে সিবিআইয়ের (CBI) বিশেষ আদালত থেকে ব্যাঙ্কশালে সিবিআই ও ইডির (ED) বিশেষ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ত্রিশঙ্কু ভোটের ফল, ফ্রান্সে মুখ পুড়ল প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর]
উল্লেখ্য, এর আগে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত কতদিনের মধ্যে তদন্ত শেষ হবে, তা জানতে চেয়ে সিবিআইকে একাধিকবার প্রশ্ন করে। এবার সিবিআইকে একই প্রশ্ন করল ব্যাঙ্কশাল আদালত। এদিন এই মামলার চার অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, পার্থ সেন, কৌশিক মাঝিকে আদালতে তোলা হয়। পার্থ সেন ও কৌশিক মাঝি ওই ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্মী। এদিন সিবিআইয়ের কাছে ২০১৪ সালে ওই সংস্থাটির ভূমিকা ও দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন বিচারক। চার্জশিটে ওই ওএমআর শিট (OMR Sheet) প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্মচারী পার্থ সেনের বিরুদ্ধে অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রস্তুত ও ওই তালিকা অনুযায়ী প্রাইমারি বোর্ডে মেল করার অভিযোগ তোলে সিবিআই। অভিযুক্তদের আইনজীবীর দাবি, এই কাজগুলি তাঁদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। সংস্থার কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তাঁরা এই কাজ করেছেন মাত্র। যে তালিকাটি সিবিআই প্রস্তুত করেছে, সেই তালিকার সবাই চাকরি পাননি। যে নামের তালিকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেই তালিকাটি বোর্ডই পাঠায়।
[আরও পড়ুন: ‘রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব কখনও মাইনাসে নামবে না’, মস্কোয় মন্তব্য মোদির]
বিচারক জানান, একটি একটি বিশাল দুর্নীতি। এই ধরনের সংস্থার কাজে প্রত্যেকেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অভিযুক্তদের যদি মনে হত কোনও ভুল কাজ হচ্ছে, তবে সেটা ‘ল-এনফোর্সমেন্ট’কে জানানো উচিৎ ছিল। সিবিআইয়ের (CBI) দাবি, ওই সংস্থার কর্মচারীরা জানতেন যে, ওই তালিকা থেকে ৩১৮ জন চাকরি পেয়েছিলেন। কোন প্রার্থী কত নম্বর পেয়েছিলেন, তা জানা সত্ত্বেও বোর্ডে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নাম পাঠানো হয়। সিবিআইয়ের দাবি, ওএমআর শিটগুলি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। বিচারক সেগুলির ডিজিটাল কপি সিবিআইকে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন। যদিও তদন্তকারী আধিকারিক জানান, এখন তল্লাশি চলার কারণে এই কপি যে আধিকারিকরা বের করতে পারতেন, তাঁরাও ব্যস্ত রয়েছেন। তাই সময় লাগবে। এর পরই বিচারক জানতে চান, তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে? তদন্ত কবে শেষ হবে? সিবিআইয়ের পক্ষে জানানো হয়, তদন্ত চলছে। কুন্তল ঘোষ চার্জ গঠনের আবেদন জানালে বিচারক সিবিআইয়ের কাছ থেকে জানতে চান যে, সিবিআই প্রস্তুত কি না। শেষে চার্জ গঠনের ব্যাপারে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।