অর্ণব আইচ: মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) ও তাঁর পরিবারের বিদেশযাত্রায় হাওয়ালা যোগ! এমনই তথ্যই উঠে এসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তে। গোয়েন্দা নজর এড়াতে বিদেশে গিয়ে এটিএম কার্ডে একটি টাকাও তোলেননি মানিক ভট্টাচার্য। যদিও পুরো পরিবার নিয়ে প্রচুর খরচ করেছেন বিদেশে, এমনই খবর ইডি আধিকারিকদের কাছে। পুরো পরিবারের বিদেশ ভ্রমণের বিপুল টাকা টেট দুর্নীতির বলেই অভিযোগ উঠেছে। সোমবারই ব্যাঙ্কশালের বিশেষ ইডি আদালতে তোলা হতে পারে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও ছেলে শৌভিককে।
ইডি জানিয়েছে, গত ২০১২ সাল থেকে মানিক ভট্টাচার্যর হাতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির টাকা আসতে শুরু করে। এরপরই মানিক তাঁর স্ত্রী, ছেলে, মেয়েকে নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে যেতে শুরু করেন। বিশ্বের অন্তত এক ডজন দেশে ঘুরেছে ওই পরিবার। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা, চিন, সাউথ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপের মতো দেশগুলিতে পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে এসেছেন মানিক ভট্টাচার্য। ইডির হিসাব অনুযায়ী, প্রায় দশ বছর ধরে এই পরিবারটি শুধু বিদেশ ভ্রমণের জন্যই অন্তত পাঁচ কোটি টাকা খরচ করেছেন।
[আরও পড়ুন: কীর্তন থেকে ফেরার পথে কোচবিহারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, টোটোয় ট্রাকের ধাক্কায় মৃত ৪]
মানিক, তাঁর স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে শৌভিকের পাসপোর্ট সম্পর্কিত নথি দেখে তাঁদের ভ্রমণের ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। কিন্তু বিদেশ ভ্রমণের সময় খরচের পদ্ধতি দেখে কিছুটা অবাকই হয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। তাঁরা পাসপোর্ট অনুযায়ী ভ্রমণের তারিখ খতিয়ে দেখেন। সেই তারিখগুলিতে মানিক, শতরূপা, শৌভিকদের ব্যাঙ্ক লেনদেনের তথ্য দেখা হয়। দেখা যায়, বিদেশ ভ্রমণ চলাকালীন এটিএম কার্ড দিয়ে তাঁরা কোনও টাকা তোলেননি। আবার বিপুল টাকা সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণে গিয়েছেন, এমন প্রমাণও পাননি ইডি আধিকারিকরা।
সেই সূত্র ধরেই ইডির মতে, প্রত্যেকবার ওই পরিবারের ভ্রমণের খরচ আসত সেই দেশের হাওয়ালা চক্রের মাধ্যমে। সেই ক্ষেত্রে কলকাতায় বসেই হাওয়ালা চক্রকে আগাম টাকা দিয়ে দিতেন মানিক। সেই হাওলা চক্রের মাথারাই মানিককে সরাসরি অথবা লোক মারফত জানিয়ে দিতেন যে, কোন শহরে হাওলা চক্রের নেটওয়ার্কে কে বা কারা রয়েছেন। তাঁদের ঠিকানাও জানিয়ে দেওয়া হয়। সেইমতো বিদেশের সেই হাওলা অপারেটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন মানিকরা। তাঁদের কোড সংখ্যা জানাতে বলা হত। সেই কোড জানালেই হাওলা চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে টাকা চলে আসত মানিকদের হাতে।