সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সময়সীমা বেঁধে দিল তৃণমূল (TMC)। রবিবার ফের দলের তরফে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)বলেন, ”একমাস, দু’মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করতে হবে। দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলও দলীয়ভাবে নিজেদের কাজ করতে পারবে।” তাঁর এই কথা থেকেই স্পষ্ট, এসএসসি দুর্নীতি মামলা নিয়ে বিরোধীদের খুব বেশি বলার অবকাশ দিতে চায় না বাংলার শাসকদল। আর সেই কারণে দ্রুত তদন্ত শেষের জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার উপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎও স্পষ্ট হবে না।
শনিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকের পরই সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ”নোটবাতিলের পর এত বিপুল টাকা একজনের বাড়িতে কীভাবে এল, তার তদন্ত হওয়া দরকার। কিন্তু তদন্ত তো অনন্তকাল চলতে পারে না। ইডির কাছে আমাদের দাবি, একমাস বা দু’মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ হোক। আদালতে চার্জশিট পেশ করে কারা দোষী, তা দ্রুত প্রমাণিত হোক। দলের তরফেও বলা হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় যদিও সত্যিই দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে দল যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চয়ই নেবে।”
[আরও পড়ুন: ‘আইনেই ভরসা’, SSC দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারির পর বললেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা]
তিনি এও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে যাঁর বাড়ি থেকে এত বিপুল টাকা উদ্ধার হয়েছে, তিনি তৃণমূলের কেউ নন। দলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। গোটা ঘটনায় তিনি বিচারব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন। দলের অবস্থান স্পষ্ট করে কুণাল ঘোষ বিজেপিকে বিঁধে বলেন, ”আমরা প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কাছে মাথা নোয়াব না। নিজেদের জনসংযোগ, জনভিত্তির নিরিখে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাব। তাঁদের বোঝাব, বাংলা থেকে প্রত্যাখ্য়াত হয়ে বিজেপি কীভাবে ষড়যন্ত্র আর প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। তার আগে পর্যন্ত দল গোটা বিষয়ের দিকে কড়া নজর রাখছে।”
[আরও পড়ুন:আজ দিনভর মেঘলা আকাশ, সোমবার বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রাজ্যের এই জেলাগুলিতে]
রবিবারও কুণাল ঘোষ বলেন, ”একই দুর্নীতি মামলায় তদন্তের জন্য ফিরহাদ হাকিমকে সিবিআই গ্রেপ্তার করে জেলে নিয়ে যেতে পারে, কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে কোনও তদন্তের মুখেই পড়তে হচ্ছে না।” ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি এই মুহূর্তে বিরোধীদের বড় হাতিয়ার হতে চলেছে। বিশেষত তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর। আর ঠিক এই জায়গাতেই অত্যন্ত সাবধানী বাংলার শাসকদল। নেতৃত্ব চায়, তদন্ত যত সময় নিয়ে চলবে, বিরোধীরা অস্ত্রে আরও শান দেওয়ার সুযোগ পাবে। এদিকে, দলও কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে না। সেই কারণেই ইডিতে এই দুর্নীতির তদন্ত দ্রুত শেষ করার জন্য বারবার প্রকাশ্যেই বলা হচ্ছে।