সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মানবিকতার দোহাই বন্ধুরা, সংগঠিত হন। ভয় পাবেন না।’- নয়ের দশকে কলকাতার মঞ্চের পর মঞ্চ গমগম করে উঠেছিল এই উদাত্ত আহ্বানে। সময় পেরিয়েছে। কতটা সংগঠিত হয়েছে জনতা? সংগীতই বা কতটা সামাজিক ভূমিকা পালন করতে পেরেছে? সে প্রশ্ন পৃথক আলোচনার দাবি রাখে। তবে ঘটনা এই, আজও তাঁর সামনে এসে ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলে কিশোরী অনুগামী। হ্যাঁ, সংগীতজীবনে তিনি তাঁর অনুগামীদের সংগঠিত করতে পেরেছেন। বয়সের গণ্ডি টপকে সকলকে আনতে পেরেছেন অনুভবের এমন এক প্ল্যাটফর্মে, যেখানে ধর্ম ও যাপনের নাম কবীর সুমন। আগামী ১৬ মার্চ সত্তরে পা দিচ্ছেন কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী। তারই সেলিব্রেশন নজরুল মঞ্চে। যে অনুষ্ঠানের ডিজিটাল পার্টনার হয়ে গর্বিত সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
[ শুধু কালিকার জন্য…আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখলেন বন্ধুরা ]
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাণখোলা সুমন। গল্পে গল্পে ফিরে গেলেন নিজের ছেলেবেলায়। মজা করে বললেন, বয়স তো সত্তর ছুঁয়েছে। তাই বকবক রোগ ধরেছে। কিন্তু কে না জানে, স্মৃতির সফরে সুমন মানেই অন্য এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হওয়া! সেখানে উঠে আসে অজস্র সুর, সংগীত ও সংগীতসাধকের কথা। কখনও বাবার কথা তো কখনও সংগীতগুরু কালীপদ দাসের কথা, কখনও আবার উস্তাদ আমি খাঁ সাহেবের স্মৃতিতে মশগুল তিনি। স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন, তানসেন নয়, তিনি কানসেন হওয়ায় বিশ্বাসী। আর মাও বা চে নন, তাঁকে ব়্যাডিকেলাইজ করেছেন নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁর সাফ কথা, জীবনে কোনওকিছুর প্রতিই বিশ্বস্ত থাকেননি। বিশ্বস্ত থেকেছেন শুধু সংগীত ও বন্ধুতার প্রতি। সেই সংগীত ও বন্ধুতারই উদযাপন হবে নজরুল মঞ্চে।
বয়স সত্তর ছুঁয়েছে। কিন্তু এখনও সুরের সপ্তকে তাঁর অনায়াস গতায়াত। বললেন, কণ্ঠস্বর ধরে রাখার এ প্রক্রিয়া, কোনও ঐশী ব্যাপার নয়। গুরুর আশীর্বাদে খানিকটা হয়। আর বাকিটা নিজের চেষ্টা, অধ্যাবসায়, বিশেষ কৌশল। সত্তরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তাঁর আশা, সংগীতের এই শিক্ষা তিনি যেন অনেককে দিয়ে যেতে পারেন। তাঁর ছাত্রদের তিনি বাংলা খেয়ালে শিক্ষিত করে তুলছেন। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। তাঁর আক্ষেপ, রাজ্য সংগীত অ্যাকাডেমির মতো প্রতিষ্ঠান তো তাঁকে ডাকতে পারে। তাহলে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে তিনি তাঁর সংগীতশিক্ষা দিয়ে যেতে পারবেন। তাঁর দাবি, সংগীতের স্বার্থেই রাজ্য তাঁকে আরও বেশি করে ব্যবহার করুক।
[ ব্রেন ক্যানসারে ভুগছেন ইরফান! অভিনেতার অসুস্থতা নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা ]
সম্প্রতি বাংলা খেয়াল নিয়ে কাজ করে চলেছেন সুমন। তার রূপ ঠিক কীরকম তার নমুনা জানতেই তিনি আগামী অনুষ্ঠানে আহ্বান জানালেন। হ্যাঁ, নিশ্চিত অন্যান্য গানও থাকবে। তবে যে কাজ তিনি ভাবীকালকে দিয়ে যেতে চান, তা দিয়ে যেতে চান তাঁর শ্রোতাদেরও। সংগঠিত হওয়ার ডাক দিতেন তিনি। সব বয়সের শ্রোতার উদ্দেশ্যেই তাঁর বন্ধু সম্বোধন। সেই বন্ধুরাই একজোট হয়েছে। বাংলা সংগীত, বাংলা খেয়ালের স্রোতে ভাসতে। আর কবীর সুমন নামক বনস্পতির ছায়ায় দুদণ্ড জিরিয়ে নিতে। ১৬ মার্চ, নজরুল মঞ্চে।
The post সংগীতের স্বার্থে রাজ্য আমাকে ব্যবহার করুক: কবীর সুমন appeared first on Sangbad Pratidin.