কৃষ্ণকুমার দাস: কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় মাত্রাতিরিক্ত বিল পাঠালে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থার সুপারিশ করবে কলকাতা পুরসভা। করোনা বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে পুরসভার নোডাল অফিসারই বিল পরীক্ষা করে এবং চিকিৎসার গাফিলতির তথ্য খতিয়ে দেখে রেগুলেটরি কমিটির কাছে শাস্তির জন্য পাঠাবেন।
শুক্রবার পুরসভা সূত্রে খবর, যদি কোনও রোগীর কিডনি, হাড়ভাঙা বা অন্য কোনও চিকিৎসা করাতে গিয়ে হাসপাতাল থেকেই শরীরে করোনা ভাইরাস (Coronavirus) প্রবেশ করে, তাহলেও দায় ওই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেরই। শুধু তাই নয়, অন্য অসুস্থতা বাদ দিয়ে ওই রোগীর করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসাও ওই হাসপাতালেরই করা উচিত বলে দাবি পুরসভার।
[আরও পড়ুন: আনলক ওয়ানেই খুলছে ঘোজাডাঙা সীমান্ত, সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে বাণিজ্য শুরুর সিদ্ধান্ত]
কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরোতে এদিন করোনা ও ডেঙ্গু বিষয়ক রিভিউ কমিটির বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলির মাত্রাতিরিক্ত বিল নিয়ে অজস্র অভিযোগ আসে। বৈঠকে ছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশাসক অতীন ঘোষ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে কলকাতা জেলার নোডাল অফিসার সঞ্জয় খারে। বরো কো-অর্ডিনেটর সুশান্ত ঘোষ কয়েকজন করোনা রোগীর মাত্রাতিরিক্ত বিলের তথ্য তুলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির ‘অনৈতিক ব্যবসা’র কথা বলেন। তাঁকে সমর্থন করেন সভায় থাকা অন্য কয়েকজন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তথা প্রাক্তন কাউন্সিলররা। বলেন,
এক রাত ভরতি করে ৮০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা বিল করছে। কোভিড পরীক্ষার নামে এক রোগীর চার-পাঁচবার লালারস নিয়ে শুধুমাত্র করোনা টেস্টের জন্যই ২৫-৩০ হাজার টাকা বিল করছে।
বৈঠকে দাবি, ভুক্তভোগী নাগরিকরা বিলের ধাক্কায় নাকাল হয়ে বারবার ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিরা সক্রিয় হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলি নবান্নে মিথ্যা অভিযোগের ভয় দেখাচ্ছে। উল্লেখ্য, এই ১২ নম্বর বরোতেই বাইপাসের পাশে বেশ কয়েকটি নামী বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। কো-অর্ডিনেটর ও পুরঅফিসারদের কাছ থেকে অভিযোগ শুনে এদিন বৈঠকে নোডাল অফিসার খারে বলেন, “তথ্য-প্রমাণ দিয়ে লিখিত অভিযোগ করতে বলুন। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করে অভিযোগটি স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে পাঠানো হবে। পরে সত্যতা যাচাই করে ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেবে স্বাস্থ্যদপ্তর।”
[আরও পড়ুন: করোনা সংকটে রেশন বন্টনে কারচুপির অভিযোগ, কলকাতা হাই কোর্টে পালটা রিপোর্ট পেশ রাজ্যের]
পুরসভার স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশাসক অতীন ঘোষের কথায়, “শহরের সমস্ত ওয়ার্ডেই ভুক্তভোগী নাগরিকরা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর মারফত বরো কো-অর্ডিনেটরের কাছে মাত্রাতিরিক্ত বিল এবং চিকিৎসার গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ তথ্য-প্রমাণ দিয়ে জানাতে পারেন।” পুরসভার নোডাল অফিসার খারে এদিন বৈঠকে জানিয়েছেন, তিনি ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট ও স্বাস্থ্যদপ্তরের অভিযোগ সংক্রান্ত রেগুলেটরি কমিটির সঙ্গে যুক্ত। তাই অভিযোগগুলি নিয়ে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তা তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
The post মাত্রাতিরিক্ত বিল দিলেই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, কোভিড চিকিৎসায় কড়া প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.