shono
Advertisement

Breaking News

৯ বছর আগে নিজের করা ভুলেই ‘রক্ষাকবচ’হারিয়েছেন রাহুল, পস্তাচ্ছেন সমর্থকরা

সাংসদ পদ খুইয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
Posted: 12:04 PM Mar 25, 2023Updated: 12:06 PM Mar 25, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। তারিখটি সম্ভবত আমৃত্যু মনে থাকবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের। কারণ, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তাঁকে এত বড় অপমানের সম্মুখীন আর কখনও হতে হয়নি। তাও নিজের দলেরই যুবনেতার কাছে। তিনি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। আজ সেই রাহুল গান্ধী, এবং অবশ‌্যই তাঁর অনুগামীদের সাড়ে ন’বছর আগের তারিখটি মনে পড়ছে। যেমন জাতীয় রাজনীতিতে বার বার ঘুরেফিরে আসছে এই তারিখটি নিয়ে আলোচনা। সেদিন রাহুল গান্ধীর করা একটি সাংবাদিক সম্মেলন।

Advertisement

ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর পদ রক্ষার পথে অন্তরায় হয়েছে ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন তিনি নিজেই। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের (Manmohan Singh) আনা অধ‌্যাদেশের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, কোনও অপরাধে দোষী সাব‌্যস্ত হয়ে কোনও সাংসদ বা বিধায়কের দু’বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হলে তৎক্ষণাৎ তাঁর সাংসদ বা বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাবে। সেই অনুযায়ী সুরাটের আদালত রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব‌্যস্ত করে দু’বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হওয়াই অবধারিত।

[আরও পড়ুন: ‘গান্ধীবাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের নিন্দায় মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য]

তবে আগের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে বলা ছিল, কোনও সাংসদ বা বিধায়ক দোষী সাব‌্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন‌্য তিন মাস সময় পাবেন। ওই সময়ে তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদনের সুযোগ পেতেন। ২০১৩ সালের ১০ জুলাই লিলি থমাস বনাম ভারত সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, “কোনও সাংসদ, বিধায়ক বা বিধান পরিষদ সদস্য, যিনি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং ন্যূনতম ২ বছরের সাজা পেয়েছেন, তিনি অবিলম্বে সংসদের সদস্যপদ হারাবেন।’ শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ধারা ৮(৪)-কে ‘অসাংবিধানিক’ তকমা দিয়ে বাতিল করেছিল।

শীর্ষ আদালতের এই রায়ের দুই মাস পরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বের ইউপিএ সরকার নির্দেশটি বাতিল করার জন্য একটি অর্ডিন্যান্স পাস করেছিল। কারণ, পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে কংগ্রেসের শরিক তথা আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পাশাপাশি, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ রশিদ মাসুদ সেই সময় একটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তাঁরও সাংসদ পদ খারিজের মুখে পড়েছিল। রাজনৈতিক মহলের ব‌্যাখ‌্যা, সে কারণেই ইউপিএ সরকার সেই সময় অর্ডিন্যান্সটি পাশ করেছিল।

[আরও পড়ুন: রাহুলের সাজা হওয়ার পরই ফিরল ৪৫ বছর পুরনো স্মৃতি, ঠাকুরমা ইন্দিরাও গিয়েছিলেন জেলে]

এরপরই অর্ডিন‌্যান্সটিক কেন্দ্র করে বিরোধিতায় নামে বাম-সহ অন‌্য বিরোধী দলগুলি। অভিযোগ ওঠে, দোষী সাব‌্যস্ত সাংসদ-বিধায়কদের ‘রক্ষাকবচ’ দিতেই সরকারের এই পদক্ষেপ। তবে তখন রাহুল গান্ধীর ভূমিকা ছিল চমকপ্রদ। বস্তুত, কংগ্রেসের ‘ক্ষমতার কেন্দ্র’ গান্ধী পরিবারের সঙ্গে মনমোহনের অনেক ক্ষেত্রেই দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। এমন সময়ই ঘটনাটি ঘটে।

২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাহুল দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস‌্যদের রীতিমতো বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেন তিনি। প্রকাশ্যে ইউপিএ সরকারের অর্ডিন‌্যান্সের তীব্র নিন্দা করেন এবং সেই অধ্যাদেশকে ‘সম্পূর্ণ অর্থহীন’ বলে অভিহিত করেছিলেন। সঙ্গে বলেছিলেন যে এই অধ্যাদেশ, ‘ছিঁড়ে ফেলা উচিত’। অর্ডিন‌্যান্সের একটি কপি তিনি ছিঁড়েও ফেলেন। এরপর ‘অপমানিত’ মনমোহন সিংকে পিছু হঠে সেই অর্ডিন‌্যান্স প্রত‌্যাহার করে নিতে হয়। তবে সেই অর্ডিন‌্যান্স আইনে পরিণত হলে আজ তা রাহুলেরই রক্ষাকবচ হত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement