সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ভর্ৎসিত হতে হল কেরলের (Kerala) বামফ্রন্ট সরকারকে। বকরি ইদ (Bakrid) উপলক্ষে তিন দিনের জন্য লকডাউন (Lockdown) শিথিল করার ঘোষণা করেছে পিনারাই বিজয়ন প্রশাসন। মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে উদ্বেগ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত। বিচারপতিদের মতে, কেবল ব্যবসায়ীদের দাবির চাপে এভাবে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুঃখজনক।
কেরল সরকার তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে খণ্ডন করে জানিয়েছে, গত ১৫ জুন থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাপে পড়েই যে এমন সিদ্ধান্ত, তাও জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নয় সুপ্রিম কোর্ট। এদিন বিচারপতি আরএফ নরিম্যান ও বিচারপতি বিআর গাবাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘‘সবচেয়ে মূল্যবান অধিকার বেঁচে থাকার অধিকার। কোনও প্রকারের চাপের জন্যই তাকে উল্লঙ্ঘন করা যায় না। যদি এই বিধিনিষেধে ছাড়ের ফলে কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে, সাধারণ মানুষ আমাদের কাছে সেই ঘটনা তুলে আনতে পারেন, তা হলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’ কেরল সরকারকে সংবিধানের ২১ ধারার দিকে মনোযোগ দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে সম্প্রতি কানোয়ার যাত্রা (Kanwar Yatra) নিয়ে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তারও উল্লেখ করে বিচারপতিদের বেঞ্চ।
[আরও পড়ুন: মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে হেফাজতে পেতে চলেছে ভারত]
বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ সিং, যিনি সরকারের বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিলকারী পিকে নাম্বিয়ারের হয়ে সওয়াল করছিলেন তিনি বিচারপতিদের কাছে আরজি জানান অবিলম্বে এই নির্দেশ বাতিল করতে। কিন্তু বিচারপতি নরিম্যান বলেন, ‘‘এখন সেটা করা অযৌক্তিক। ঘোড়া ইতিমধ্যেই ছুটতে শুরু করে দিয়েছে। আমরা বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করছি না।’’ প্রসঙ্গত, কেরল সরকারের নির্দেশে গত রবিবার থেকেই লকডাউন শিথিল রয়েছে কেরলে। আজই শেষ দিন। কাল থেকে আর তা প্রযোজ্য হবে না।
এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম করোনা প্রভাবিত রাজ্য কেরল। তা সত্ত্বেও সেরাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার এমন ছাড় কী করে দিতে পারে সে প্রশ্ন এর আগে তুলেছে কংগ্রেসের মতো বিরোধী দল। কেরল সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে IMA তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও।
এর আগে করোনার কারণেই কানোয়ার যাত্রা বাতিল করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। তবে উত্তরপ্রদেশ প্রাথমিক ভাবে যাত্রায় অনুমতি দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তিরষ্কারের পরে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় যোগী সরকারও। কানোয়ার যাত্রা স্থগিত থাকলেও ইদের ক্ষেত্রে কেন লকডাউন শিথিল করা হল, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল কয়েক দিন ধরেই। এবার সুপ্রিম কোর্টও সমালোচনা করল এমন সিদ্ধান্তের। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ভর্ৎসিত হতে হল কেরলের (Kerala) বামফ্রন্ট সরকারকে।