সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মণিপুরের (Manipur) বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কড়া মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালত-নিযুক্ত বিচারপতি গীতা মিত্তল কমিটির জমা দেওয়া রিপোর্টে ‘উদ্বেগজনক’ পরিস্থিতির উল্লেখ করা হয়েছে। তারপরই সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেল আর. ভেঙ্কটরামানিকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সরকারের কাজ। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের বক্তব্য আমাদের জানান।’ প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ পৃথক নির্দেশে গত বছর থেকে চলা হিংসাত্মক ঘটনাগুলির জেরে দায়ের হওয়া মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট চেয়েছে মণিপুর সরকার, সিবিআই এবং এনআইএ-র কাছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা জানতে চাই কতগুলো মামলা বিচারের জন্য উপযুক্ত।”
গত বছরের মে মাস থেকে অশান্ত মণিপুর। আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাস ফেরাতে গত ৭ আগস্ট বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মণিপুরের বিভিন্ন হিংসার ঘটনার তদন্ত, ত্রাণের কাজ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং বিভিন্ন ধ্বংস হয়ে যাওয়া ধর্মীয় স্থানের পুননির্মাণের মতো মানবিক কাজগুলি পর্যালোচনার জন্য দেশের বিভিন্ন হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত তিন মহিলা বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল। এছাড়া কমিটিতে ছিলেন বম্বে হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শালিনী ফাঁসালার জোশী এবং দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আশা মেনন। এছাড়া, যৌন হিংসা সংক্রান্ত যে ১১টি ঘটনার ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, সেগুলির তদন্তের ভার সিবিআই-কে দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা
[আরও পড়ুন: দাসপুরে ধূপ কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, ধোঁয়ায় ঢাকল এলাকা, ৩৫ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা]
রক্ষার স্বার্থে, সিবিআই-এর তদন্তকারী দলে অন্যান্য রাজ্যের এসপি পদের অন্তত ৫ জন অফিসারকে নিয়োগ করেছিল। সিবিআইয়ের প্রশাসনিক আওতাতেই এই আধিকারিকরা কাজ করছে। শুধু তাই নয়, সিবিআইকে এই মামলাগুলির তদন্তের বিষয়ে রিপোর্ট করতে হয় শীর্ষ আদালতে। এর জন্য মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ডিজি তথা মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার দত্তাত্রেয় পদসালগিকরকে তত্ত্বাবধায়ক অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করেছিল আদালত।
[আরও পড়ুন: নিজের গাড়ি নেই, পুরুলিয়ার তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরামের প্রচারে আসছে দুধ সাদা দামি গাড়ি]
এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি মিত্তল কমিটির প্রতিনিধিত্বকারী সিনিয়র আইনজীবী বিভা মাখিজা রিপোর্টের বিষয়বস্তু তুলে ধরেন। বলেন, “সব ত্রাণের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিক্ষোভ সশস্ত্র প্রতিবাদে পরিণত হয়েছে। আধিকারিকদের কাছে মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মণিপুরে।” এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কড়া মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সরকারের কাজ। সুপ্রিম কোর্ট অসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজের কর্মকাণ্ড এভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’