সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে আদালতে বিচারাধীন একাধিক মামলা। এবার এই প্রথম কোনও একটি মামলায় কয়লা সংস্থা এবং তার কর্তাদের ক্লিনচিট দিয়ে মামলা খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত সংস্থা ইস্টার্ন মিনারেল অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সি (এমটা) কলকাতার। এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর উজ্জ্বল উপাধ্যায়। সংস্থা ও তার কর্তা উভয়কেই সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্ত করে সুপ্রিম কোর্ট তীব্র ভর্ৎসনা করেছে সিবিআইকে।
শীর্ষ আদালতের মত, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (ক্যাগ) অডিট রিপোর্টে ভরসা করে দায়সারা তদন্ত হয়েছে। অথচ ওই অডিট রিপোর্ট চূড়ান্ত নয় বলেই মন্তব্য করেছে বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুল্লার বেঞ্চ। যেহেতু ক্যাগের ওই রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি, তাই ১৯৮৮ সালের দুর্নীতিদমন আইনের একাধিক ধারায় মেসার্স কর্নাটক এমটা কোল মাইনস লিমিটেডের (কেইসিএমএল) বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। কয়লা ব্লক মামলায় সিবিআই আদালতের বিশেষ বিচারকের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে এই সংস্থাটি আপিল দায়ের করেছিল।
[আরও পড়ুন: মিস ইন্ডিয়ায় সংরক্ষণ নেই কেন? প্রশ্ন রাহুল গান্ধীর! ফের ‘বালক বুদ্ধি’ খোঁচা দিল বিজেপি]
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের তিনটি কয়লা ব্লক থেকে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব পেয়েছিল কর্নাটক পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (কেপিসিএল)। তারা এবং ইস্টার্ন মিনারেল অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সি (এমটা) একটি যৌথ উদ্যোগ, কর্নাটক এমটা কোল মাইনস লিমিটেড (কেইসিএমএল) গঠন করে কেপিসিএল-কে বেল্লারি থার্মাল পাওয়ার স্টেশনে ক্যাপটিভ ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করা কয়লা খনিগুলি উন্নয়ন ও পরিচালনা করতে। অভিযোগ উঠেছিল, এমটা অনৈতিকভাবে কয়লা তুলে অবৈধভাবে লাভ করে। ৫৩.৩৭ কোটি টাকা বেআইনি লাভের অভিযোগ উঠেছিল এমটা এবং কেপিসিএল-এর বিরুদ্ধে। তদন্তে নামে সিবিআই। বিশেষ সিবিআই আদালতে দুটি সংস্থাকে অভিযুক্ত হিসাবে দায়ী করা হয়। তারা শীর্ষ আদালতে সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ক্যাগ রিপোর্টকে ‘লঞ্চিং প্যাড’ হিসাবে ব্যবহার করেছে সিবিআই। ক্যাগ এখনও চূড়ান্ত অডিট রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি। অথচ সেই রিপোর্টকেই হাতিয়ার করে মাছ ধরার মতো তদন্ত চালিয়েছে সিবিআই। জোর করে একটি চুক্তিকে ‘অপরাধমূলক’ বলে চালিয়েছে। শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, একটি বাণিজ্যিক চুক্তিকে ‘অপরাধ’ হিসাবে প্রমাণ করতে গোটা মামলাকে সিবিআই পিছনের দিকে চালিত করেছে। দুই সংস্থার চুক্তিতে কোনও ত্রুটি আছে কি না, সেটা বেআইনি কি না, তা সিবিআই প্রমাণ করতে পারেনি। দুই সংস্থার বর্জ্য নিয়ন্ত্রণেও কোনও বেআইনি তৎপরতা মেলেনি বলে জানিয়ে নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।