সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যোগীরাজ্যে অমানবিক কাণ্ড! ভরা ক্লাসরুমে শাস্তি দেওয়ার নামে শিক্ষিকা যা করলেন, তা নজিরবিহীন। নামতা মুখস্থ না করার শাস্তি হিসাবে এক মুসলিম পড়ুয়াকে তাঁর ক্লাসের সহপাঠীদেরই মারধর করার নির্দেশ দেন শিক্ষিকা। উত্তরপ্রদেশের এক বেসরকারি স্কুলের এই ঘটনার ভিডিও নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল। কারণ, সেখানে মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে শিক্ষিকাকে। আর অমানবিক শিক্ষিকার ভিডিও দেখতেই রণংদেহী স্বরা ভাস্কর।
তবে শুধু স্বরা ভাস্কর নন, প্রকাশ রাজ, রেণুকা সাহানিদের মতো তারকারাও প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। প্রসঙ্গত, এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের একটি বেসরকারি স্কুলের। নামতা না পড়ে আসায় ক্লাসের শিক্ষিকা নির্দেশ দেন, সহপাঠীরাই ওই পড়ুয়াকে মারধর করবে। শিক্ষিকা আরও বলেন, মুসলিম মহিলারা আসলে তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার দিকে খেয়াল রাখেন না। সেই জন্যই মুসলিম পড়ুয়াদের পড়াশোনার মান এত খারাপ। গোটা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কড়া পদক্ষেপ করা হয় ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। এবার সেই প্রেক্ষিতেই ফের একবার বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদীকে তুলোধনা করলেন স্বরা ভাস্কর।
স্বরার মন্তব্য, “প্রিয় ‘মর্মাহত’ হিন্দুরা, আপনারা যদি বিজেপিকে ভোট দিয়ে গোঁড়ামি এবং ঘৃণার মুখে নিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করেন। কিংবা বছর খানেক ধরে যা ঘটনা ঘটে চলেছে, সেগুলোর উভয়পক্ষ দেখেও চুপ করে থাকেন, তাহলে আপনাদের এই অবাক হওয়া, কুম্ভিরাশ্রু পিছনে রাখুন। আপনাদের মধ্যে সততা নেই।”
[আরও পড়ুন: জাতীয় পুরস্কার পেলেন ‘বিনোদিনী’ পরিচালক রামকমল, ‘বড় সার্টিফিকেট’ প্রযোজক দেবের]
অভিনেত্রী রেণুকা সাহানীর মন্তব্য, সেই নিষ্ঠুর শিক্ষিকাকে জেলে পাঠানো হোক। ওঁকে জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার দেওয়া উচিত। হাজার হোক, উনি কেন্দ্রের আসল উদ্দেশের প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। আজ কাঁদুক আমার দেশ।
দিন কয়েক আগেই চাঁদে চাওয়ালা কার্টুনে মোদিকে ঠুকে বিতর্কে জড়িয়েছেন প্রকাশ রাজ। গেরুয়া শিবির বিরোধী অভিনেতা এবার যোগীরাজ্যের কাণ্ড নিয়েও মুখর হলেন। প্রকাশের টুইট, “মানবিকতার অন্ধকার দিকে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। আপনাদের চিন্তা হয় না? না শুধু জিজ্ঞেস করছি।”
ইতিমধ্যেই স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে মুসলিম পড়ুয়ার বাবা জানিয়েছেন এই নিয়ে কোনও তদন্ত করতে চান না তিনি। তবে নিজের ছেলেকে ওই স্কুলে আর পড়াতে চান না। নির্যাতিত পড়ুয়াকে অন্য স্কুলে ভরতি করা হবে বলে জানিয়েছেন তার বাবা।