সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ জানিয়ে কলেজ বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করল এক ১৭ বছরের কিশোরী। মৃত্যুর ঠিক আগেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সেই নির্যাতিতা টেক্সট মেসেজ করে কথা বলছিল বলে জানা গিয়েছে। তার শেষ মেসেজ ছিল তার দিদির প্রতি, ‘সরি দিদি, আমাকে যেতে হবে।’ বিশাখাপত্তনমে ঘটেছে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা।
জানা গিয়েছে, বিশাখাপত্তনমের এক পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রী ছিল ওই কিশোরী। রাত ১০টা নাগাদ হস্টেল কর্তৃপক্ষ ফোন করে তার পরিবারকে জানায়, মেয়েটি নিরুদ্দেশ। খবর পেয়ে তার বাড়ি থেকেও ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। পরে রাত ১২টা ৫০ মিনিট নাগাদ মেয়েটি তার বাড়িতে মেসেজ করে। কিন্তু মেসেজ পেয়ে বাড়ির লোক অস্থির হয়ে পড়ে।
[আরও পড়ুন: বাংলায় এসেই শক্তিপীঠে রণিত রায়, কোথায় পুজো দিলেন?]
কী জানিয়েছিল মৃতা কিশোরী? সে তার মা-বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা দিদির কাছে অনেক কথাই জানিয়েছিল। চূড়ান্ত অভিমানের সুরে জানিয়েছিল, তাকে যেন ক্ষমা করে দেওয়া হয়। কিন্তু নিজেকে শেষ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তার কাছে। মেয়েটি জানিয়েছিল, তার হস্টেলের ভিতরেই তাকে যৌন নির্যাতন করেছে কয়েকটি ছেলে। মুখ খুললে নগ্ন ছবি অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা। তাই পুলিশ বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কারও কাছে অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব নয়। একই পরিস্থিতিতে পড়েছে হস্টেলের আরও কয়েকটি মেয়ে। এর পরই দিদির কাছে দুঃখপ্রকাশ করে সে লাফ দেয় বিল্ডিং থেকে। পরে তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নির্যাতিতার বাড়ির লোক জানিয়েছেন, একেবারে শেষ মুহূর্তে ওই কিশোরীকে নিরস্ত করার সবরকম চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। জানিয়েছিলেন, পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম হঠকারিতা যেন সে না করে। কিন্তু আর কোনও সাড়া মেলেনি। আসলে ততক্ষণে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ে ফেলেছে ১৭ বছরের মেয়েটি।
কিশোরীর বাবার কথায়, ”আমি জানতে চাই আমার মেয়ে কেন মারা গেল। আমি ওকে অনেক আদর আর যত্নে বড় করেছি। ও দশম শ্রেণির পরীক্ষায় চমৎকার নম্বর পেয়েছিল। অনেক আশা নিয়ে এখানে ওকে ভর্তি করেছিলাম।”
[আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটে অভিষেকের বিরুদ্ধে পদ্মপ্রার্থী রুদ্রনীল? জল্পনা তুঙ্গে]
এদিকে কলেজের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, ”কোনও ছেলেই মেয়েদের হস্টেলে যেতে পারে না। সেখানে মহিলা ওয়ার্ডেনরা রয়েছেন। যৌন নির্যাতনের কোনও সম্ভাবনাই নেই।” পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত পড়ুয়া ও পুরুষ কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।