স্টাফ রিপোর্টার: ফের পড়ুয়াদের আন্দোলনের মুখে পিছু হটল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় (Presidency University) কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের সিসিটিভি শুধুমাত্র নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে– এই মর্মে লিখিত দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণকুমার মাইতি।
মঙ্গলবার সাধারণ পড়ুয়াদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকেই নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরেন ছাত্রছাত্রীরা। ফলস্বরূপ মিলেছে ক্যাম্পাসের সিসিটিভি নজরদারির জন্য ব্যবহার না হওয়ার নিশ্চয়তা। সম্প্রতি কয়েকজন পড়ুয়াকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ডিসিপ্লিনারি কমিটির সামনে দাঁড় করানো হয়েছিল। পড়ুয়াদের দাবি ছিল, ডিসিপ্লিনারি কমিটিগুলি ভেঙে ফেলতে হবে। সেই দাবিও মেনে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাম্প ও নিজের স্বাক্ষর-সহ সেই মর্মে একটি সাদা কাগজে লিখিত দিয়েছেন ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণকুমার মাইতি। তাতে এও জানানো হয়েছে যে, সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পরবর্তী আলোচনার আগে ‘কোড অফ কন্ডাক্ট’ চালু করা হচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: সকাল থেকেই একটানা বৃষ্টি, কেমন কাটবে আগামী ২৪ ঘণ্টা, জানাল আবহাওয়া দপ্তর]
বিগত কয়েকদিন ধরেই ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদে উত্তাল প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাস। একদিকে পড়ুয়াদের জন্য তৈরি খসড়া আচরণবিধি ও তাতে উল্লিখিত একাধিক বিতর্কিত নিয়ম। অন্যদিকে ক্যাম্পাসে ‘প্রেম’ করতে গিয়ে ধরা পড়া যুগলদের ডিসিপ্লিনারি কমিটির সামনে দাঁড় করানো, তাঁদের অভিভাবকদের ক্যাম্পাসে ডাকার অভিযোগ। যা নিয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হন পড়ুয়ারা।
এদিন সাধারণ পড়ুয়াদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণকুমার মাইতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাক কো-অর্ডিনেটর ও কয়েকজন বরিষ্ঠ অধ্যাপক ছিলেন। বিতর্কিত কোড অফ কন্ডাক্ট প্রত্যাহারের পাশাপাশি পড়ুয়ারা দাবি জানান, ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে এখনও যে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, সেগুলোকে বাতিল করতে হবে। যে সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকদের একপ্রকার ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল, সেই ফুটেজ ডিলিট করতে হবে এবং সিসিটিভি কেবলমাত্র নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে হবে, নজরদারির জন্য নয়। এই সকল দাবিদাওয়া নিয়ে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়।
ছাত্রছাত্রীদের চাপে বেশ কয়েকটি দাবি মেনে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং তা নিয়ে লিখিতও দেন ডিন অফ স্টুডেন্টস। প্রেসিডেন্সির পড়ুয়া অহন কর্মকার বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দু’টি দাবি মেনে নিয়েছেন। সমস্ত দাবি না মানা অবধি আন্দোলন চলবে।’’ এসএফআই-এর তরফে ঋষভ সাহা বলেন, ‘‘স্যর লিখিত দিয়েছেন, যে সমস্ত ডিসিপ্লিনারি কমিটি চলছিল, সেগুলি মকুব করা হল। এবং আর কোনও ডিসি এই নির্দিষ্ট বিষয়গুলিতে বসানো হবে না। কোড অফ কন্ডাক্ট কার্যকর করাও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।’’ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের স্বাক্ষর সম্বলিত দাবিপত্রের পাশাপাশি একটি পৃথক ডেপুটেশন দিয়েছিল এসএফআই। সেই ডেপুটেশনের নিচেই নিজের সই-সহ ‘নিরাপত্তার স্বার্থে সিসিটিভি ব্যবহারে’র বিষয়টি লিখে দেন ডিন অফ স্টুডেন্টস।