shono
Advertisement

Breaking News

‘ISL-এ ইস্টবেঙ্গল অনিশ্চিত শুনে আমি হতাশ’, লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কট নেভিল

লাল-হলুদ জার্সিতে ফের কি দেখা যাবে অজি ডিফেন্ডারকে?
Posted: 04:15 PM Jun 08, 2021Updated: 08:46 PM Jun 08, 2021

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধ্বস্ত দেশ। এরই মধ্যে রাজ্যে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় যশ। এই জোড়া ধাক্কায় রাজ্য ও দেশের অবস্থা শোচনীয়। ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) অবস্থাও অনেকটা সেরকমই। বিনিয়োগকারী সংস্থার  সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলার কোনও লক্ষণই নেই। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে আইএসএলে (ISL) লাল-হলুদের মাঠে নামা নিয়েই রয়েছে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন। তার মধ্যেই ট্রান্সফার ব্যান জারি করেছে ফিফা (FIFA)। যদিও কথোপকথনের সময়ে ফিফার নিষেধাজ্ঞার কথা জানা ছিল না তাঁর। ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমর্থকদের মতোই তিনিও চিন্তিত, উদ্বিগ্ন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলার সময়ে সেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন স্কট নেভিল (Scott Neville)। শুনলেন কৃশানু মজুমদার

Advertisement

করোনার থাবায় ভারত বিধ্বস্ত। খবরাখবর নিশ্চয় পাচ্ছেন।
স্কট– কোভিড (COVID-19) মহামারীর ছবিটা ভারতে কীরকম, সে সম্পর্কে আমি ভালই জানি। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বললেও কম বলা হবে। ভারত ছেড়ে চলে এলেও ইস্টবেঙ্গলের চিকিৎসক এবং ফিজিওর সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়ে গিয়েছে। ওঁদের থেকে ভারতের খবরাখবর আমি জানতে পারছি। আর আজকের পৃথিবীতে খবর জানা কোনও ব্যাপারই নয়। যাই হোক, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসুক ভারত।

 আপনি কি পারথে আছেন? ওখানকার অবস্থা কেমন?

স্কট– আমি আসলে ব্রিসবেনে থাকি। মার্চে ভারত থেকে ফেরার পরে এ লিগের ক্লাব ব্রিসবেন রোয়ারের (Brisbane Roar FC) হয়ে ১৫টি ম্যাচ খেলেছি। তৃতীয় স্থানে থেকে আমরা শেষ করেছি। সেরা ৬টি দলকে নিয়ে হবে ফাইনাল। তার জন্য আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। এখানে করোনার জন্য কোনও বিধিনিষেধ নেই। দর্শকদের সামনেই খেলতে পারছি। এটা একদিক থেকে ভালই বলতে হবে।

 

[আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলকে নির্বাসিত করল ফিফা, জাতীয় স্তরের ফুটবলার সই করাতে পারবে না লাল-হলুদ]

 

আইএসএলে এবার আশা জাগিয়েই গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সমর্থকদের হতাশ হতে হয়েছে।
স্কট- নিজের কথা আগে বলে নিই। আমি আইএসএল বেশ উপভোগই করেছি। মাঠ ভর্তি দর্শকের সামনে খেলা হয়নি ঠিকই। সেদিক থেকে দেখলে ব্যাপারটা দুর্ভাগ্যজনকই বলতে হবে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরেও খেলা সম্ভব হয়নি। এটাও হতাশাজনকই। এবার আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে আসি। টু্র্নামেন্ট শুরুর আগে প্রস্তুতির জন্য মাত্র ১১দিন সময় পেয়েছিলাম। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের জন্য ১১দিন কি যথেষ্ট? এটা কিন্তু অত্যন্ত লজ্জারই ব্যাপার। ঠিকঠাক প্রস্তুতি না হওয়ায় আমাদের শুরুটাও ভাল হয়নি। তার উপরে গোটা টুর্নামেন্টে চোটআঘাত লেগেই ছিল। সব মিলিয়ে নিজেদের মেলে ধরতে পারিনি। তবে টুর্নামেন্টের শেষের দিকে আমাদের খেলা অনেকটাই খুলেছিল। বোঝাপড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিনের প্রস্তুতির জন্যই প্রথমবার খেলতে নেমে ভাল কিছু করা যায়নি।

প্রস্তুতি ঠিকঠাক না হওয়াতেই সাফল্য পাননি আপনারা। এটা আপনিও বলছেন, অনেকেই বলেছেন আগে। শুধু কি প্রস্তুতিতেই সমস্যা ছিল? নাকি দলগঠনও ঠিকঠাক হয়নি?
স্কট- আগেই বলেছি, আমরা হাতে সময় খুব কম পেয়েছি। একটা দল হয়ে উঠতে সময় লাগে। সেই সময়টা আমরা পাইনি বললেই চলে। ফলে যেভাবে আমরা খেলতে চেয়েছিলাম, সেটা মাঠে নেমে একেবারেই সম্ভব হয়নি। তবে টুর্নামেন্ট যত এগিয়েছে, আমরা ততই উন্নতি করেছি। খেলাও আগের থেকে ভাল হয়েছে।

আপনার ফুটবলে হাতেখড়ি ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের কাছে। আপনার বাবা ও মর্গ্যান একসঙ্গে খেলেছেন। দু’ জন অভিন্ন হৃদয় বন্ধুও বটে। ইস্টবেঙ্গলে খেলতে আসার আগে মর্গ্যানের থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। খেলে যাওয়ার পরে কী বললেন মর্গ্যান?

স্কট- ট্রেভর মর্গ্যান দুর্দান্ত একজন কোচ। ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলেছিলেন আমাকে। ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কেও অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। ডার্বির গুরুত্ব ওঁর কাছ থেকেই জানতে পারি। ডার্বির দিন কলকাতা ফুটতে থাকে, তা আমাকে জানিয়েছিলেন ট্রেভর মর্গ্যানই। ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ এখনও দেখেন মর্গ্যান। ভারত থেকে এখানে আসার পরে টুর্নামেন্ট নিয়ে বিশেষ কথা হয়নি। ব্রিসবেন রোয়ারের বাকি ম্যাচগুলো নিয়ে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি।

আপনার ভবিষ্যৎ প্ল্যান কী? ভারতে কি আবার আপনাকে খেলতে দেখা যাবে?

স্কট- ব্রিসবেন রোয়ারের সঙ্গে আরও ১৮ মাসের চু্ক্তি রয়েছে আমার। ইস্টবেঙ্গলে খেলতে গিয়েছিলাম লোনে। আবার যদি ইস্টবেঙ্গলে খেলতে যাই, তাহলেও আমাকে লোনে ছাড়বে ব্রিসবেন। খেলার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।

কিন্তু এবার ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলবে কিনা সেটাই তো পরিষ্কার নয়। বিনিয়োগ কারী সংস্থার সঙ্গে সংঘাত চলছে।

স্কট- ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত হতাশাজনক ব্যাপার। ইস্টবেঙ্গল ছাড়া আইএসএল কি ভাবা যায়? আশা রাখি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। তাহলে বেশ কয়েকজন প্লেয়ারও সাইন করাতে পারবে। সমর্থকরাও কিছু ভাল খবর পাবেন। 

[আরও পড়ুন: ইউরোয় দাগ কাটতে পারবে তারকাখচিত বেলজিয়াম? দেখে নিন টিম প্রোফাইল]

আপনার ফুটবল-জীবনে ইস্টবেঙ্গল অধ্যায়কে কীভাবে দেখবেন?
স্কট- ইস্টবেঙ্গলে খেলার স্মৃতি কোনওদিনও ভুলতে পারব না। তিনটি ম্যাচে এত বড় একটা ক্লাবের অধিনায়ক ছিলাম। এটাও দারুণ ব্যাপার বলতে হবে। খেলতে গিয়ে বেশ কয়েকজন দারুণ মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব চিরকাল থাকবে বলেই আশা রাখি। মাস পাঁচেক বাবলের মধ্যে ছিলাম আমরা। একটা পরিবারের মতো হয়ে উঠেছিলাম আমরা। ভারত সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেশুনেই গিয়েছিলাম। থাকতে থাকতেই অনুভব করেছি ইন্ডিয়া ইজ অ্যান অ্যামেজিং কান্ট্রি। সব ঠিকঠাক হয়ে গেলে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমার স্ত্রীকে নিয়ে ভারতে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আর অতি অবশ্যই কলকাতায় খেলা দেখবো।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement