সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজয়ী হওয়ার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা। ‘অধরা মাধুরী’ বিশ্বকাপ (FIFA World Cup) হাতে নেওয়ার ঘোর কাটিয়ে উঠে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মনের কথা জানালেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। সেই পোস্টে ঝরে পড়ল আবেগ ও মুগ্ধতা। ইনস্টাগ্রামে ঠিক কী লিখলেন তিনি?
তাঁকে লিখতে দেখা গিয়েছে ‘… গ্র্যান্ডোলি থেকে কাতারে বিশ্বজয়ের মাঝে কেটে গিয়েছে প্রায় ৩০ বছর। প্রায় তিন দশক ধরে এই খেলাটা থেকে বহু আনন্দের এবং কিছু দুঃখের মুহূর্ত উপহার পেয়েছি। কিন্তু একটা বিষয় কোনওদিন পালটায়নি। সেটা হল, আমি সবসময় বিশ্বজয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখে গিয়েছি আর সেই চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। এমনকী মাঝে মাঝে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না মনে হলেও আমি হাল ছাড়িনি। আমাদের এই জয় শুধু আমাদের নয়। এর আগে যারাই বিশ্বকাপ জেতার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি, তাদের সবার জয়। যেমন ২০১৪ সালে ব্রাজিলে, যেখানে আমাদের জয় প্রাপ্য থাকলেও আমরা খালি হাতে ফিরেছি। কারণ সেবার আমরা কঠিন লড়াই করে ফাইনালে যাই। ট্রফি জিততে আমরা সবাই ঘাম ঝরিয়েছি। শেষ পর্যন্ত ফলাফল যাই হোক, সেবারই ট্রফি আমাদের প্রাপ্য ছিল।’
[আরও পড়ুন: ১৮ নয়, ছেলেমেয়েরা পরিণত হয় ২৫ বছরে! হাই কোর্টে দাবি কেরলের বিশ্ববিদ্যালয়ের]
পোস্টের পরের অংশে এসে পড়েছে দিয়েগো মারাদোনা প্রসঙ্গও। মেসি লিখেছেন, ‘আমাদের এই জয় দিয়েগোর জন্যও। ও সবসময় আমাদের সঙ্গে ছিল। আমাদের উৎসাহ দিয়েছে। এবং এই জয় তাদের, যারা ফলাফলের কথা না ভেবেই জাতীয় দলকে সমর্থন করে গিয়েছে। সবসময়, যে কোনও পরিস্থিতে। ওদের একটাই চাহিদা ছিল যে, আমরা যেন কখনও হাল না ছাড়ি। এবং অবশ্যই এই জয় আমাদের এই দুর্দান্ত স্কোয়াডের জন্য, যেখানে কোচিং স্টাফ-সহ অন্যরাও রয়েছে। যেখানে সবাই ব্যক্তিগত লাভ-লোকসান ভুলে দিন-রাত কাজ করে গিয়েছে, যাতে আমাদের কোনও সমস্যা না হয়। অনেক সময়ই ব্যর্থতা আমাদের যাত্রা আর শিক্ষার অংশ হয়। এবং হতাশা ছাড়া সাফল্য পাওয়া একেবারেই অসম্ভব। সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা! ভ্যামোস আর্জেন্টিনা (Argentina)!!!’
এদিকে মেসিরা দেশে ফেরার পর কার্যতই আবেগের বিস্ফোরণ ঘটেছে আর্জেন্টিনায়। বিমান কতক্ষণে দেশের মাটিতে নামবে, তা নিয়ে অধীর অপেক্ষা করেছে গোটা দেশ। এর আগেও বহুবার এভাবে ফিরেছেন মেসিরা। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি অন্য। কারণ এবার যে বিমানে মেসিদের সঙ্গী হয়েছিল বিশ্বকাপ। ৬ কেজির সামান্য বেশি ওজনের যে ট্রফির জন্য ৩৬ বছরের দীর্ঘ প্রতিক্ষা করেছে আর্জেন্টিনা। ফলে মেসিরা কখন বিশ্বকাপ নিয়ে দেশে ফিরবেন, তা নিয়ে চূড়ান্ত উত্তেজনা ছিল বুয়েনেস আইরেস সহ আর্জেন্টিনার বিভিন্ন প্রান্তে। মেসিরা বিমান থেকে নামার পরে তাঁদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের মাঝখানে।
[আরও পড়ুন: চিনে নতুন করে ঊর্ধ্বমুখী করোনা, সতর্কতায় পরীক্ষা বাড়াতে নির্দেশ কেন্দ্রের]
অবশ্য যাত্রাপথে একবার বড় বিপদের মুখে পড়েছিলেন মেসিরা। সেসময় হুডখোলা বাসের একেবারে উপরে বসে ছিলেন মেসি, লিয়ান্দ্রো পারেদেস, রডরিগো ডে’পল, অ্যাঞ্জেল ডি’মারিয়া এবং নিকোলাস ওটামেন্ডি। হঠাৎই ঝুলে থাকা একটি বিদ্যুতের তার এসে লাগে মেসিদের মাথায়। কোনওরকমে মাথা নিচু করে রক্ষা পান ওই পাঁচ তারকা।