জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: দিলীপ ঘোষের সভার পর ফের বিজেপির (BJP) বনগাঁ সাংগঠনিক সভায় গরহাজির দলেরই একাধিক নেতা, বিধায়ক ও সাংসদ। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ রবিবার দুপুরে বিজেপির বনগাঁ (Bongaon) সাংগঠনিক জেলার নেতাদের নিয়ে বনগাঁ জেলা অফিসে দলের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দেখা মিলল না বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, গাইঘাটার সুব্রত ঠাকুর ও বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ বিধায়ক, সাংসদদের পাশাপাশি এ দিনের বৈঠকে দেখা যায়নি বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল, কল্যাণ সরকার-সহ একাধিক নেতাকে৷
কেন তাঁরা এলেন না? সে বিষয়ে বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া শরীর অসুস্থ সে কারণে যাওয়া হল না জানালেও বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবদাস মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির নবদ্বীপ জনের প্রো-কনভেনার অভিজিৎ দাস। তিনি জানিয়েছেন, ”সকলকে ডাকা হয়েছিল৷ কেন তাঁরা আসেননি জানি না। কোনও সমস্যা আছে নিশ্চই।”
[আরও পড়ুন: অনগ্রসর শ্রেণির জন্য বিনামূল্যে IAS ট্রেনিং, রাজ্যের উদ্যোগে চালু ক্র্যাশ কোর্স]
বিজেপি কর্মীরা জানিয়েছেন, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে জেলা সভাপতিদের বিরোধ বেঁধেছে। দু’জনের অনুগামীরা এখন আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে৷ বিভিন্ন কর্মসূচিতে একপক্ষ গেলে আরেক পক্ষকে দেখা যায় না। সম্প্রতি বিজেপি রাজ্য সভাপতি বনগাঁয় বৈঠক করতে এসেছিলেন। সেখানে মানসপতি দেব উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি শান্তনু ঠাকুর ও তার গোষ্ঠীর নেতা বিধায়কদের৷ দিন কয়েক আগে দলীয় রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে বনগাঁয় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। রক্তদান শিবিরের শান্তনু ঠাকুর ও প্রথম সারির নেতারা উপস্থিত থাকলেও রক্তদান শিবিরে দেখা যায়নি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মানসপতি দেব ও তাঁর অনুগামীদের। গোটা ঘটনায় বিজেপি কর্মীরা বিভ্রান্ত। তাঁদের বক্তব্য, অবিলম্বে নেতৃত্বরা আলোচনায় বসে নিজেদের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে ফেলুক।
[আরও পড়ুন: মহিলা ভোটেই বাজিমাত তৃণমূলের? বাংলার নির্বাচন নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য দিল কমিশন]
এই ঘটনাকে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ বলে কটাক্ষ করে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, “শুনেছি বনগাঁয় বিজেপির মিটিং হচ্ছে। সেখানে অনেক নেতা, বিধায়করাই যাননি। অনেকেই এখন বিজেপিতে থাকতে চাইছে না। আগামীতে বিজেপি দলটি এ রাজ্যে থাকবে না।” এদিনের সংগঠন সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পর্যবেক্ষক প্রসেনজিত ভৌমিক, বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়-সহ একাধিক নেতা।