ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: যাবতীয় জল্পনার অবসান। বিরোধীদের টেক্কা দিয়ে রাজ্যের বড় দলগুলির মধ্যে সবার প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যাশিতভাবেই নিজের ‘কর্মভূমি’ নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে ৩ দিন আগেই দেখানো হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চলেছেন। নিজের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুরে এবার প্রার্থী হচ্ছেন না তিনি। সেই খবরেই সিলমোহর পড়ল।
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, “আমি যা কথা দিই, সেটা রাখি। আমি আগেই ঘোষণা করেছি, সেইমতো নন্দীগ্রামেই দাঁড়াচ্ছি।” মুখ্যমন্ত্রীর বর্তমান কেন্দ্র ভবানীপুরে প্রার্থী হচ্ছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মমতা জানিয়েছেন, “এবারে ভবানীপুরে দাঁড়াতে না পারলেও পরে সুযোগ পেলে দাঁড়াব। এখানে আমাদের দলের সিনিয়র নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী হচ্ছেন।”
[আরও পড়ুন: আসনরফা হলেও এখনও প্রতীক পায়নি আব্বাসের আইএসএফ, চিন্তায় জোট নেতৃত্ব]
২০১৬’র মতো এবারেও ‘পয়া দিন’ শুক্রবার দেখে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেন তৃণমূলনেত্রী। এদিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বাড়িতে দলের নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠক শেষে ২৯১ আসনের জন্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে শাসক শিবির। পাহাড়ের তিনটি কেন্দ্র ছাড়া হয়েছে জোটসঙ্গী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জন্য। এবারের প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ, নানা সমাজের তৃণমূল স্তরের মানুষ, ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিত্বের উপর বিশেষ নজর দিয়েছে শাসক শিবির। তৃণমূলের প্রার্থীদের মধ্যে ১০০-র বেশি প্রার্থীর বয়স পঞ্চাশের নিচে। এছাড়াও বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতাকে এবার প্রার্থী করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দলের বহু বিশ্বাসযোগ্য নেতাকে এবার প্রার্থী করা হচ্ছে না। তবে, এবার ক্ষমতায় ফিরলে বিধান পরিষদ তৈরি করবে রাজ্যের শাসকদল। বিধান পরিষদের মাধ্যমে পুনর্বাসন দেওয়া হবে বাদ পড়া এই নেতাদের। এছাড়াও আশির বেশি বয়সি নেতাদের এবার অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আসনরফা হলেও এখনও প্রতীক পায়নি আব্বাসের আইএসএফ, চিন্তায় জোট নেতৃত্ব]
এবারের প্রার্থী তালিকায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মহিলা, তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতিদের। ৫০ জন মহিলা, তফসিলি জাতির জন্য ৬৮ জন সংরক্ষিত কিন্তু প্রার্থী ৮৯ জন। তফসিলি উপজাতি ১৬টি সংরক্ষিত আসন থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল প্রার্থী করেছে ১৭ জন তফসিলি উপজাতিকে। সেই সঙ্গে অবশ্যই নজর কেড়েছে তালিকাই তারকাদের উপস্থিতি। এবার শাসকদলের হয়ে টিকিট পাচ্ছেন রাজ চক্রবর্তী, সায়ন্তিকা, সায়নী ঘোষ, রাজ চক্রবর্তীর মতো তারকারা।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের কাছে সমর্থন প্রার্থনা করেন। বলেন,” এবারও আপনারা আস্থা রাখুন, তৃণমূলই পারে শান্তি, সংহতি এবং উন্নতি একসঙ্গে করতে। আমরা বাংলাকে গোটা দেশের মধ্যে এক নম্বরে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা এখনও মনে করি বাংলা শাসন করবে বাংলার মানুষই। কোনও বহিরাগতরা বাংলা শাসন করবে না।” এদিন আরও একবার বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেসের মধ্যে আঁতাতের অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।