সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সর্বভারতীয় রাজনীতিতে শক্তি বাড়াতে তৃণমূল কংগ্রেস যে বাংলার বাইরে প্রথম রাজ্য হিসাবে ত্রিপুরাকেই টার্গেট করেছে, সেকথা আর কোনও রাজনীতি সচেতন মানুষের অজানা থাকার কথা নয়। অন্তত গত কয়েকদিনে একের পর এক তৃণমূল নেতার ত্রিপুরায় আনাগোনা এবং বিপ্লবের রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ঘাসফুল শিবিরের বাড়তে থাকা কর্মসূচির বহর অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। ইতিমধ্যেই এরাজ্যের শাসকদলের নেতাকর্মীরা ত্রিপুরাতে গিয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন, এবার ত্রিপুরাতেও ‘খেলা হবে’। কিন্তু কোন কৌশলে? কোন রণনীতিতে ত্রিপুরায় মিশন ২০২৩ সফল করতে চাইছে তৃণমূল, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রিপুরা সফরের পর।
আসলে এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় তৃণমূলের (TMC) দিকে কিছুটা হাওয়া তৈরি হয়েছে। ত্রিপুরায় আই প্যাক টিমের সদস্যদের ‘আটকে রাখা ও পুলিশি জেরা’ সেই হাওয়ার গতি বাড়িয়েছে। দলের নেতানেত্রীদের সে রাজ্যে যাতায়াত বেড়েছে। বাড়ছে সংগঠনও। ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদারদের মতো নেতানেত্রীরা ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় ঘুরে এসেছেন। প্রথমে ঠিক ছিল বৃহস্পতিবারই ত্রিপুরা (Tripura) যাবেন অভিষেক। পরে সেই সফর পিছিয়ে করা হয় শুক্রবার। কিন্তু ত্রিপুরায় শনি ও রবিবার সাপ্তাহিক লকডাউনের জন্য শুক্রবারের পরিবর্তে সোমবার আগরতলায় পা রাখবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি ‘মিশন ত্রিপুরা’ শুরুই করবেন ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে। দুপুরে দলের সাংগঠনিক বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকও করার কথা।
[আরও পড়ুন: সেনাকে পাথর ছুঁড়লে সরকারি চাকরি,পাসপোর্ট নয়! ‘দেশদ্রোহী’ দমনে কড়া Kashmir প্রশাসন]
তার আগেই অবশ্য অভিষেকের সফরের জমি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে TMC। সূত্রের খবর, ত্রিপুরা সফরে একাধিক সাংগঠনিক বৈঠক করতে পারেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে গ্রাউন্ড রিপোর্ট নিতে পারেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় গিয়ে ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়েও দিয়েছিলেন, ’ত্রিপুরাতেও খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই তৃণমূলে যোগদানের জন্য যোগাযোগ করেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা পৌঁছালেই তাঁদের নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ অর্থাৎ অভিষেকের সফরের উপর নির্ভর করছে, বেশ কয়েকটি সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। একদিকে যেমন সংগঠনের হাল খতিয়ে দেখবেন তিনি। অন্যদিকে তেমনি অন্য দল থেকে নেতানেত্রীদের যোগদান করানোর ক্ষেত্রে স্পষ্ট দিকনির্দেশও করে দিতে পারেন। তৃণমূল সূত্রের দাবি, এরাজ্যে বড় জয়ের পরই অন্য দল থেকে কর্মীরা যোগ দেওয়া শুরু করেছিলেন। এবার নেতাদের পালা। অভিষেকের সবুজ সংকেত মিললেই বড় যোগদান শুরু হয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, নিজেদের সংগঠন মজবুত করার পাশাপাশি ত্রিপুরার উপজাতি ভিত্তিক দলগুলির দিকেও নজর রাখবেন অভিষেক। কারণ, উপজাতিরাও ত্রিপুরার রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রয়োজনে কোন দলের সঙ্গে হাত মেলানো যায়, সেটাও এখন থেকেই ভেবে রাখতে পারে ঘাসফুল শিবির।
[আরও পড়ুন: মিটল দীর্ঘদিনের বিবাদ, Assam-Nagaland সীমানা থেকে নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার দুই রাজ্যেরই]
যদিও, অভিষেকের এই সফরকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন,”ত্রিপুরায় তৃণমূল আছে নাকি?” বাংলার বাইরে কোথাও তৃণমূল নেই বলেই দাবি দিলীপের।