বিক্রম রায়, কোচবিহার: মিহির গোস্বামীর পর জগদীশ বর্মা বসুনিয়া (Jagadish Barma Basunia)! মঙ্গলবার প্রকাশ্যেই দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন সিতাইয়ের ওই তৃণমূল বিধায়ক। রাখঢাক না রেখে এদিন কার্যত বিক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর পাশেই দাঁড়ান তিনি। মঞ্চে হাজির জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের সামনেই বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া অভিযোগ করেন, মিহিরবাবুকে জোর করে দলের বাইরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। প্রকাশ্য জনসভায় দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি দাবি করেন, “লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha Election) যারা অন্তর্ঘাত করেছে, তারাই এখন দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছে।” বিধায়কের এমন অস্বস্তিকর মন্তব্যের পর হইচই শুরু হয়েছে দলের অন্দরে।
এদিকে ফের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী (Mihir Goswami) ফেসবুক পোস্টে নিজের আবেগ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, সাংগঠনিক পদ থেকে পদত্যাগ করার ছয় সপ্তাহে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রাজ্য ও বিভিন্ন স্তর থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু যার জন্য অজস্র অসম্মান সহ্য করেছেন, সেই দলনেত্রীর ফোন আসেনি। তাঁর আক্ষেপ, “আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই। তাই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করাটা কি স্বাভাবিক নয়!”
[আরও পড়ুন: ভুল মূর্তিতে মাল্যদানের জের, ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে অমিত শাহকে চিঠি আদিবাসীদের একাংশের]
বিক্ষুব্ধ বিধায়কের ওই পোস্টের পরই আসরে নামেন সিতাই কেন্দ্রের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। তিনি বলেন, “মিহির গোস্বামীর প্রতি যে অবহেলা হয়েছে, সেটা ঠিক নয়। দল থেকে তাঁকে ঠেলে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে কিছু নেতা উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন, যাতে মিহিরবাবু দল থেকে চলে যান।” তিনি বলেন, মিহিরবাবুর মতো প্রবীণ নেতৃত্বের প্রতি ওই ধরনের বক্তব্য কখনই উচিত নয়। জেলা সভাপতির কিছু অনুগামীরা এটা করছেন । দল শক্তিশালী থাক সেটা তারা চায় না। এখানেই থেমে না থেকে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক প্রকাশ্য সমাবেশে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সুর চড়ান বিধায়ক। তিনি বলেন, “আমাদের কিছু নেতা আছেন যারা আলটপকা কথা বলেন। মানুষকে খোঁচা দিয়ে বিপথে ঠেলে দেওয়া যায়, সেটাই তাদের উদ্দেশ্য। যারা নিজেদের পদ না পেলে উলটো কথা বলত, তারাই এই ধরণের মন্তব্য করছেন। শুধু তাই নয় গত লোকসভা নির্বাচনে যারা বিজেপির দালালি করে দলের প্রার্থীকে হারিয়েছেন, তারাই এখন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।”
ওই সময় মঞ্চে হাজির ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh) এবং বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। বিধায়কের বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়তে হয় তাঁদের। যদিও প্রকাশ্যে কেউ মন্তব্য করেননি। পরে বক্তব্য রাখতে উঠে ওই মঞ্চ থেকে ২০২১-এর নির্বাচনকে পিঠ বাঁচানোর নির্বাচন আখ্যা দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি দাবি করেন, “এই নির্বাচনে হারলে পিঠের চামড়া থাকবে না। তাই জিততে হবে।”