সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষক আন্দোলনের (Farmers’ Protest) মোকাবিলা করতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে বলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) বাংলার বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন। বড়দিনের উপহার হিসেবে কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে কিস্তির টাকা দিয়েছেন কৃষকদের অ্যাকাউন্টে। এরপরই তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে বাংলার কৃষকরা কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই কেন্দ্রের এই টাকা পাচ্ছেন না কৃষকরা। মোদির বক্তব্য শেষ হতেই পালটা জবাব দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)। তাঁর জবাব, বাংলার কৃষকদের নিজেদের পরিস্থিতি নিয়ে একটিও অভিযোগ নেই, তাঁরা খুশি।
কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় একমাস ধরে দিল্লিতে চলছে কৃষক বিক্ষোভ। ‘কালা’ আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে চেষ্টা কম করেনি কেন্দ্র। কিন্তু লাভ হয়নি। কৃষক কিংবা কেন্দ্র – কেউই নিজেদের দাবি থেকে একচুলও সরেনি। এই অবস্থায় কয়েকদিন থেমে থাকার পর বড়দিনে প্রধামন্ত্রী মোদি কৃষকদের সঙ্গে ভারচুয়ালি আলোচনায় বসেন। সেখান থেকেও তাঁকে বাংলার কৃষকদের পরিস্থিতি বর্ণনা করে সরকারকে তোপ দেগেছেন। তবে তার জবাবও পেলেন।
[আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে সরকার’ এবার তারকাখচিত, দেব-মিমি-নুসরতদের নিয়ে প্রচারের ভাবনা তৃণমূলের]
শাসকদলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় মোদির অভিযোগের জবাবে বলেন, ”গত ১০ বছরে বাংলায় কোনও কৃষক আন্দোলন দেখেছেন? এখানকার কৃষকদের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁরা ভাল আছেন। রাজ্যে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে ৫ গুণ।” পাশাপাশি নয়া কৃষি আইন কতটা কৃষক স্বার্থবিরোধী, তা বোঝাতে গিয়ে সৌগতর বিশ্লেষণ, এই আইন লাগু হলে ফসল ফলানোর আগেই দাম স্থির হয়ে যাচ্ছে। পুঁজিপতিরা নিজেদের ইচ্ছামতো দামে ফসল কিনে প্রচুর মুনাফা লুটবে। কেন্দ্র অন্য পথে চুক্তিচাষের ব্যবস্থা করছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
[আরও পড়ুন: বিজ্ঞপ্তি সত্ত্বেও করোনা বিধি মানছেন না সুলভ শৌচালয় ব্যবহারকারীরা, বাড়ছে আশঙ্কা]
মোদির অভিযোগ অনুযায়ী, রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলার কৃষকদের কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী বাস্তব এমনটা নয়। কেন্দ্রের ‘কিষাণ নিধি সম্মান’-এর চেয়ে রাজ্যের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প অনেক ভাল বলে বারবারই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তবে এ নিয়ে বহু সমালোচনায় পড়ে এ রাজ্যে ‘কিষাণ নিধি সম্মান’ লাগু করার আবেদন জানিয়ে অন্তত তিনবার তিনি চিঠিও লিখেছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে। এমনিতেই রাজধানীর কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন করে তৃণমূল। এই আবহে কেন্দ্রের উপর চাপ আরও বাড়াতে চলতি সপ্তাহেই ফের চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাতে কেন্দ্রের তরফে কোনও জবাব আসেনি বলেই খবর। এই যুক্তিতেই ‘রাজনৈতিক কারণে বাংলার কৃষকদের বঞ্চনা’ সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ খারিজ করছে তৃণমূল নেতৃত্ব।